Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০২:০৩, ৩০ মে ২০২৫

জুলকারনাইন সায়েরের বিস্ফোরক দাবি, এমআই- RAB যৌথ মিশনের অংশ

সুব্রত বাইন: ‘র’ এর কিলি মিশন- টার্গেট লন্ডন প্রবাসী বিরোধী নেতা

সুব্রত বাইন: ‘র’ এর কিলি মিশন- টার্গেট লন্ডন প্রবাসী বিরোধী নেতা
ফাইল ছবি

আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে ঘিরে বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরেছেন আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেয়া দীর্ঘ পোস্টে সুব্রতের অতীত ও সাম্প্রতিক কার্যকলাপের নেপথ্যের বহু অজানা অধ্যায় সামনে আসে।

শীর্ষ সন্ত্রাসী থেকে ‘র’-এর কমান্ডো

জুলকারনাইনের বর্ণনা অনুযায়ী, ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৩ জন কুখ্যাত সন্ত্রাসীর তালিকা তৈরি করে। এ তালিকায় শীর্ষে ছিলো সুব্রত বাইন। তার মাথার দাম ঘোষণা করা হয় এক লাখ টাকা। এরপর পরিস্থিতির চাপে পড়ে সুব্রত তার সহযোগী মোল্লা মাসুদকে নিয়ে যশোরের পুটখালি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। কিন্তু নিয়মিত চাঁদার টাকা তুলতে বেনাপোল হয়ে দেশে ফিরত, এমনকি যশোরের বেজপাড়ায় স্ত্রী বিউটি ও সন্তানদের নিয়ে বাসা ভাড়া করে সেখানেই থাকতো এবং বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত করে দেশে ঢুকে চাঁদা আদায় করতো।

ভারতে গ্রেফতার, এরপর গোয়েন্দা সংস্থার ছত্রচ্ছায়ায়

কোলকাতার কালিঘাট এলাকা থেকে একসময় সুব্রতকে গ্রেফতার করে ভারতীয় পুলিশ। কিন্তু তখনই সক্রিয় হয় আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী তানভিরুল ইসলাম জয়। জয় এবং সুব্রত—উভয়ের মধ্যে তখনই শুরু হয় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখা এমআই-এর সঙ্গে সমন্বয়। তিনজনকে কমান্ডো প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয় মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে। দায়িত্বে ছিলেন ‘র’-এর সিনিয়র অফিসার এস. মাথুর।

দিল্লিতে ডেকে এনে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ভারতবিরোধী সংগঠন উলফা, নাগাল্যান্ড, এবং পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ এমকিউএম নেতাদের তালিকা ও অবস্থান। সুব্রত এ তালিকা অনুসারে বাংলাদেশে ঢুকে মোহাম্মদপুরে বোম সম্প্রদায়ের এক নেতার স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে খুন করে, একইসঙ্গে গুলি করে হত্যা করে বিহারী ক্যাম্পের মোস্তাকিম কাবাবের মালিক মোস্তাকিমকে, যার পাকিস্তানি সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিলো।

সিঙ্গাপুর-চীন হয়ে দুবাই ও দাউদ ইব্রাহিমের নেটওয়ার্কে প্রবেশের চেষ্টা

২০০৭ সালে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুরোধে কোলকাতা পুলিশের অভিযান শুরুর প্রেক্ষিতে সুব্রত আত্মগোপনে চলে যায়। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় সে ‘আলী মোহাম্মদ’ নামে ভারতীয় পাসপোর্টে সিঙ্গাপুর হয়ে চীনে আশ্রয় নেয়। পরে চীন থেকে দুবাইয়ে গিয়ে বিলাসবহুল জীবনে প্রবেশ করে। সেখানে তার সংস্পর্শে আসে পলাতক টাইগার মেমন। গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, তাকে দাউদ ইব্রাহিমের চক্রে প্রবেশের নির্দেশ দিয়েছিলো ‘র’। কিন্তু মিশন ব্যর্থ হয়।

পরবর্তীতে সুব্রত আবারও ‘র’-এর নির্দেশে নেপাল হয়ে ভারতে ফিরে আসে এবং পরিকল্পিতভাবে কোলকাতায় গ্রেফতার হয়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয় বিশেষ ব্যবস্থায়—সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে।

বাংলাদেশে ফিরে গোপন মিশন, লক্ষ্য লন্ডনে থাকা বিরোধী নেতা

সুব্রতকে ফিরিয়ে আনার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় র‌্যাব সদর দফতরে। সাক্ষাৎ করেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান এবং মনিরুল ইসলাম। তাকে একটি টার্গেট দেয়া হয়—লন্ডনে অবস্থানরত এক বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাকে হত্যা। প্রস্তাব ছিলো, মিশন সফল হলে পরিবারসহ কানাডায় স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা।

তারপর তাকে ‘স্নাইপার’ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়—দূর থেকে লক্ষ্যবস্তু হত্যা, বাতাসের গতি, আর্দ্রতা ও দূরত্ব গণনার প্রশিক্ষণ। তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের সুযোগ রাখা হয় মেয়ের মাধ্যমে।

হাসিনা সরকারের পতনের পর ‘র’-এর সঙ্গে পুনঃসংযোগ

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর সে মিশন থেমে যায়। সুব্রতকে তখন তার মেয়ে বিতুর কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়। এরপর সে আবারও ভারতের ‘র’-এর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। সহযোগী মোল্লা মাসুদ স্যাটেলাইট ফোনসহ বাংলাদেশে ফেরে। এ দুই সন্ত্রাসীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন নেপালে পলাতক আওয়ামী ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসী লেদার লিটন।

সুব্রত বাইন এখনো সক্রিয়। তার উপস্থিতি ও মিশন শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, বরং গোটা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। জুলকারনাইন সায়েরের পোস্টে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি ঘিরে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।

সবার দেশ/কেএম

শীর্ষ সংবাদ:

পাঁচ অস্ত্রসহ গ্রেফতার লিটন গাজী সম্পর্কে সব জানালো পুলিশ সুপার
আনসার ভিডিপি ব্যাংকের ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ব্যবস্থাপক গ্রেফতার
লালমনিরহাটে স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন
ভোলাহাটে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু
সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দালাল চক্রের খপ্পরে
বাংলাদেশ সীমান্তে পঁচছে ৩০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ
সুদের টাকার জন্য নোয়াখালীতে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেফতার-১
ইমরান খান বেঁচে আছেন, দেশ ছাড়তে চাপ: পিটিআই
হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের প্লট দুর্নীতি মামলার রায় আজ
শুরু হলো বিজয়ের মাস
বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত
খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে হাসপাতালে জামায়াত সেক্রেটারি
স্কুল ভর্তির লটারি ১১ ডিসেম্বর
বিডিআরকে দুর্বল করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখাতেই পিলখানা হত্যাকাণ্ড
ছয় উপসচিবের দফতর পরিবর্তন