জানালেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম
‘সেনা হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের কারাগার নির্ধারণ করবে ট্রাইব্যুনাল’
সেনাবাহিনীর হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের কোথায় রাখা হবে—সে সিদ্ধান্ত নেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের ভেতরে একটি ভবনকে সাময়িক কারাগার ঘোষণা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন,
সরকারের যে কোনও স্থাপনাকে সাবজেল বা কারাগার ঘোষণা করার ক্ষমতা রয়েছে, সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত। কিন্তু কোনও আসামিকে গ্রেফতারের পর কোথায় রাখা হবে, তা আদালতই ঠিক করবে। গ্রেফতারের পর অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করতেই হবে, তারপর আদালতের নির্দেশেই তার অবস্থান নির্ধারণ হবে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন,
আইন অনুযায়ী, কাউকে গ্রেফতার করা হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হবে। আদালত যদি বলেন— কারাগারে পাঠাতে, তবে সেটি হতে পারে কেন্দ্রীয় কারাগার, সংসদ ভবন, এমপি হোস্টেল কিংবা সরকার ঘোষিত অন্য কোনো স্থান। আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো আইন মেনে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা।
তিনি স্পষ্ট করে জানান,
সেনাবাহিনী কোনোভাবেই গ্রেফতারের ক্ষমতা রাখে না। গ্রেফতারকারী কর্তৃপক্ষ মানেই পুলিশ। সেনাবাহিনীকে কেবল অবহিত করা হয়েছে, যাতে তারা প্রয়োজনে সহায়তা করতে পারে। পুলিশই পরোয়ানা তামিল করবে। সেনাবাহিনী কাউকে গ্রেফতার করবে না।
চিফ প্রসিকিউটর জোর দিয়ে বলেন,
আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। এখানে কারও মর্যাদা বেশি বা কম—এমন কোনো বিষয় নেই। কাউকে বাড়তি সুবিধা দেয়া বা আলাদা আচরণের সুযোগ আইনে নেই।
এর আগে গত বুধবার গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় ১৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ১৪ জন বর্তমানে চাকরিরত এবং একজন অবসরোত্তর (এলপিআর) অবস্থায় আছেন।
শনিবার সেনাসদর থেকে জানানো হয়, আদালতের আদেশ অনুসারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সেনা হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
পরে গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪১(১) ধারা ও ১৮৯৪ সালের ‘দ্য প্রিজন অ্যাক্ট’-এর ৩(বি) ধারার ক্ষমতাবলে ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডসংলগ্ন ‘এম ই এস ভবন নম্বর ৫৪’–কে সাময়িক কারাগার হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
সরকারের এ ঘোষণার পরই আজ চিফ প্রসিকিউটর পরিষ্কার করে বলেন, কোন স্থাপনাকে কারাগার করা হবে, সেটি সরকারের বিষয়। তবে অভিযুক্তদের কোথায় রাখা হবে, সে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আদালতই নেবে—এটাই আইনের বিধান।
সবার দেশ/কেএম




























