যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার আহ্বান বিএনপির

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনে করছে, দীর্ঘদিনের ভারত ও চীন নির্ভর পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে এসে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা সময়ের দাবি। দলের শীর্ষ নেতাদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশকে কৌশলগতভাবে শক্তিশালী করতে হলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা অপরিহার্য।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় ওয়াশিংটন টাইমস-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলের শীর্ষ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির এ অবস্থান তুলে ধরেন। তারা বলেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে স্বৈরাচারী শাসনের পর বাংলাদেশ এখন এক নতুন রাজনৈতিক যুগে প্রবেশ করছে, যেখানে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে বহুমাত্রিক কূটনীতি গড়ে তোলা দরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, 

আমাদের নীতি হলো সবার বন্ধু হওয়া—আমেরিকা, ভারত, চীন, ইউরোপের সঙ্গেও। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের অন্যতম বড় বিনিয়োগকারী। সেক্ষেত্রে একটি স্বাভাবিক জোট গড়ে তোলাই যৌক্তিক।

হুমায়ুন কবিরের ভাষ্য, 

শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ মূলত ভারতের উপর নির্ভরশীল ছিলো। চীনের প্রতিও একই ধরনের ঝুঁকেছিলো সরকার। কিন্তু বিএনপি এমন এক পররাষ্ট্রনীতি চায়, যা কোনও একক দেশের উপর নির্ভরশীল হবে না। বরং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে শক্ত অবস্থান থেকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, ইউরোপ ও জাপানের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেলে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়। এ সরকারের অধীনে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা।

বিএনপি নেতারা দাবি করেন, হাসিনার সময় ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অগ্রগতি একতরফা ছিলো, যা বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করেনি। একই সময়ে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা হলেও, বেইজিং থেকে প্রত্যাশিত অর্থায়ন আসেনি। চীন-বাংলাদেশ বাণিজ্য ঘাটতিও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।

হুমায়ুন কবির বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার হলেও, দরকার শক্ত অবস্থান থেকে আলোচনা করা। একই সঙ্গে পশ্চিমাদের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক চ্যানেল খোলা রাখতে হবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মডেল বাংলাদেশ অনুসরণ করতে পারে, তবে কোনও একটি দেশের প্রিজম দিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি দেখা উচিত নয়।

সূত্র: ওয়াশিংটন টাইমস

সবার দেশ/কেএম