সতর্ক করলো রিউমর স্ক্যানার
কক্সবাজারে মার্কিন সেনা! বিভ্রান্তিকর প্রচারণা

সম্প্রতি কক্সবাজারে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা বা সামরিক বাহিনীর ‘গোপন উপস্থিতি’ রয়েছে—এমন দাবি ছড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছে দেশের অন্যতম ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।
প্রতিষ্ঠানটির সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচার মূলত একটি সংগঠিত অপপ্রচারের অংশ।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে ‘মার্কিন সেনা উপস্থিতি’ হিসেবে উপস্থাপন
রিউমর স্ক্যানার জানায়, কক্সবাজারে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের উদ্যোগে পরিচালিত কিছু আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এ ধরনের প্রশিক্ষণ সাম্প্রতিক নয়; গত কয়েক বছর ধরেই ইউএস এমব্যাসির সহযোগিতায় সীমান্ত নিরাপত্তা, দুর্যোগ প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক প্রশিক্ষণ হয়ে আসছে।
বিদেশি সোর্স থেকে অপপ্রচার, লক্ষ্য বাংলাদেশ
অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে যে, ভারতীয় কিছু অনলাইন পোর্টাল ও সোশ্যাল মিডিয়া সক্রিয় অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে ঘিরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে এ ধরনের অপপ্রচারের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
শুধু এপ্রিলেই শনাক্ত ২৯৬টি ভুয়া তথ্য
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসেই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া অন্তত ২৯৬টি বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই করে গুজব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোর একটি বড় অংশ দেশের নিরাপত্তা, কূটনৈতিক সম্পর্ক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে তৈরি ও প্রচার করা হয়েছে।
সংগঠিত গুজবের পেছনে বহুমুখী উদ্দেশ্য
রিউমর স্ক্যানারের গবেষকরা মনে করেন, দেশি-বিদেশি নানা উৎস থেকে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা এবং নিরাপত্তা-সংক্রান্ত ভীতির পরিবেশ তৈরি করাই এই গুজব ছড়ানোর প্রধান উদ্দেশ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচার কেবল গণমাধ্যমেই নয়, বরং রাজনীতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনেও ভুল সিদ্ধান্ত ও উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।
বিশ্বব্যাপী তথ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর নতুন যন্ত্র ‘সোশ্যাল মিডিয়া’। রাষ্ট্র ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এমন অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রযুক্তিনির্ভর সচেতনতা ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তথ্য যাচাই ব্যবস্থার সম্প্রসারণ এখন সময়ের দাবি।
সবার দেশ/কেএম