পানির সংকটে পাশে দাঁড়াল বেইজিং, ভারতের দাদাগিরি শেষ
পাকিস্তানে বিশাল বাঁধ নির্মাণ করছে চীন

ভারতের পানি সরবরাহ বন্ধের হুমকির পর পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে চীন। চীনের সহায়তায় পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে একটি বিশাল বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে, যা হবে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম বাঁধ।
এ বাঁধটির উচ্চতা হবে ৭০০ ফুট, এবং এটি গড়ে তোলা হচ্ছে সোয়াত নদীর ওপর, পেশোয়ার শহর থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার উত্তরে। বাঁধটির নাম মোহমন্দ বাঁধ, এবং এর সঙ্গে থাকবে একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
চীনের দ্রুত সহায়তা
বিশাল এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১২০ কোটি মার্কিন ডলার।
বিদ্যুৎ ও পানি সুবিধা
পাকিস্তান জানিয়েছে, মোহমন্দ বাঁধ থেকে প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। পাশাপাশি পেশোয়ারসহ আশপাশের এলাকায় প্রতিদিন ৩০ কোটি গ্যালন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যাবে, যা কৃষি কাজেও ব্যবহার করা হবে।
ভারতের হুমকি ও সিন্ধু চুক্তি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যেসব নদীর ওপর ভারতের অধিকার আছে, সেসব থেকে পাকিস্তানকে পানি দেয়া হবে না।
১৯৬০ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু নদ পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর হয়, যাতে পশ্চিম দিকের তিনটি নদী—সিন্ধু, চেনাব (চন্দ্রভাগা) এবং ঝেলম (বিতস্তা)—পাকিস্তানকে বরাদ্দ দেয়া হয়। এর বিপরীতে ভারত পায় পূর্ব দিকের তিনটি নদী—রবি (ইরাবতী), বিয়াস (বিপাশা) এবং শতদ্রু।
এ চুক্তির আওতায় পাকিস্তান তার কৃষি ও পানির চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ ভারত থেকে পাওয়া পানির ওপর নির্ভর করে।
চীনের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে
ভারতের হুমকি ও পানির সংকটের মুখে চীনের এ প্রকল্প পাকিস্তানের জন্য বড় উপহার হয়ে উঠছে। এটি শুধু কৃষিতে নয়, খাইবার-পাখতুনখোয়ার সামগ্রিক অর্থনীতিতেও বড় পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছে ইসলামাবাদ।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টও এ বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পকে "গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক" হিসেবে উল্লেখ করেছে।
সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই এ বাঁধ প্রকল্প দক্ষিণ এশিয়ায় চীন-পাকিস্তান সম্পর্ককে আরও জোরদার করার দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সবার দেশ/কেএম