জাতীয় সংসদে জানাজা, কবি নজরুলের পাশে সমাহিত
শহীদ ওসমান হাদির জানাজা আজ দুপুর দুইটায়
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিশিষ্ট যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির লাশ শুক্রবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে ঢাকায়। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
পরিবারের দাবিতে কবি নজরুল ইসলামের পাশে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং শুক্রবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছে।
বিমানবন্দর থেকে হিমঘরে লাশ
শুক্রবার সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে কফিনবহনকারী বিমান বাংলাদেশে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা নীরবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান। এর মধ্যে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমসহ ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিমানবন্দর থেকে লাশ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হিমঘরে নেয়া হয়। রাত পৌনে ৭টায় মরদেশ সেখানে পৌঁছে। ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, হিমঘরে রাখার পর কর্মীরা শাহবাগে অবস্থান নেবেন। লাশ দেখার কোনও সুযোগ থাকবে না।
জানাজার ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা
প্রথমে দুপুর আড়াইটায় জানাজার ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো, পরে দুপুর ২টায় সিদ্ধান্ত হয়। প্রেস উইং জানায়, জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের ব্যাগ বা ভারী বস্তু না নেয়ার অনুরোধ। সংসদ ভবন ও আশপাশে ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পরিবারের দাবিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বাদ জোহর জানাজা শেষে মিছিলসহ হাদির লাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল মসজিদে আনা হবে।
ইনকিলাব মঞ্চ ছাত্র-জনতাকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, যেনো কোনও গোষ্ঠী অনুপ্রবেশ করে আন্দোলন স্তিমিত করতে না পারে এবং সহিংসতার সুযোগ না পায়। শহীদ ওসমান হাদির জন্য দোয়া পৌঁছানোর অনুরোধ করছি।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনাপ্রবাহ
১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে গণসংযোগে অংশ নেয়ার সময় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মাথায় বিদ্ধ হন ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়, অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শাহাদাত লাভ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুর সংবাদে কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ঘটে। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। লন্ডনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা গায়েবানা জানাজা আদায় করেছেন। শহীদ হাদির শাহাদাত জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে অমর করে রেখেছে।
সবার দেশ/কেএম




























