ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটতে বাধ্য হবে
নির্বাচন না হলে যাদের লাভ, হাদির ঘাতক সেখানেই: তারেক রহমান
নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বহাল রাখা গেলে কিংবা জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে যারা লাভবান হবে, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘাতকেরা তাদের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান—প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামই প্রমাণ করেছে, জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে জনতার বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, নির্ধারিত সময়েই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, জনগণকে প্রকৃত অর্থে ক্ষমতাবান করার পূর্বশর্ত হলো জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা। এ কারণেই বিএনপি সবসময় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও যেকোনো মূল্যে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় অটল থাকবে।
বক্তব্যে ষড়যন্ত্রকারীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে—অকারণে একের পর এক শর্ত আর নানা অজুহাত তুলে ধরে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী কিছু চক্র বারবার নির্বাচন আয়োজনের পথে বাধা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। তবে সব বাধা উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জনগণের প্রত্যাশিত জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে।
তারেক রহমান বলেন, কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও থেমে নেই। গণতন্ত্রের পক্ষে সাহসী কণ্ঠস্বর ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো সে ষড়যন্ত্রেরই অংশ। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ওসমান হাদির অপরাধ কী ছিলো? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেই গণতন্ত্রকামী জনগণের সামনে ঘাতকদের প্রকৃত চেহারা স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
তিনি আরও প্রশ্ন তুলে বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা গেলে কারা সবচেয়ে বেশি খুশি হবে? নির্বাচন ছাড়াই এ সরকার বহাল থাকলে কারা লাভবান হবে? দেশে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কাদের স্বার্থ রক্ষা হবে? তারেক রহমান বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এ প্রশ্নগুলোর উত্তরেই হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে আছে। স্বাধীনতাপ্রিয় ও গণতন্ত্রকামী জনগণের শত্রুরা আজও ঘাপটি মেরে রয়েছে।
সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেশি-বিদেশি অপশক্তি তখন যেমন সক্রিয় ছিলো, এখনও তেমনি সক্রিয় রয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাদের রং, রূপ ও চেহারা বদলালেও চরিত্র বদলায়নি।
বক্তব্যের শেষদিকে তারেক রহমান দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, যারা গণতন্ত্রকামী জনগণকে ভয় দেখাতে চায়, তারা অবশ্যই ব্যর্থ হবে, ইনশাআল্লাহ। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মানুষের জয়-পরাজয়, জীবন-মৃত্যু সবই আল্লাহর ইচ্ছায় নির্ধারিত। তাই আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এগিয়ে নিলে ষড়যন্ত্রকারীরা একদিন পিছু হটতে বাধ্য হবে।
সবার দেশ/কেএম




























