বিএনপির নতুন কৌশল ফলপ্রসূ
ধানের শীষে নির্বাচনের জন্য দল ছাড়ছেন জোটের নেতারা
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে বিএনপির সঙ্গে মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোর আসন ভাগাভাগি আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত আকার নেবে। কিন্তু সবচেয়ে চতুর কৌশল হলো—মিত্র দলগুলোর তারকাখ্যাত শীর্ষ নেতারা নিজ নিজ দল ছাড়িয়ে বিএনপিতে যোগ দিয়ে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচনে নামবেন।
নির্বাচন বিধান অনুযায়ী নিবন্ধিত দলের প্রার্থীরা জোট করলেও নিজ দলের প্রতীক ব্যবহার করতে বাধ্য, কিন্তু এ বাধা অতিক্রম করতে বিএনপি ও শরিকরা নতুন কৌশলে এগোচ্ছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, অন্তত ১০ জন শীর্ষ নেতা শিগগিরই দলত্যাগ করে বিএনপির প্রার্থী হয়ে ধানের শীষে লড়বেন।
এতে আসন নিয়ে সৃষ্ট মনোমালিন্য অনেকাংশে কেটে যাচ্ছে। বিএনপি গত বুধবার থেকে মিত্র দলগুলোর সঙ্গে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক করে আসছে। দলটি ইতোমধ্যে দুই ধাপে ২৭২ আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে, ২৮টি আসন ফাঁকা রেখেছে মিত্রদের জন্য। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের কনসেপ্ট অনুযায়ী কিছু আসন শরিকদের জন্য ছেড়ে দেয়া হবে।
প্রধান নেতাদের আসন ও পরিকল্পনা
নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, মিত্র দলের নেতারা নিম্নলিখিত আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে নামবেন
- মোস্তফা জামাল হায়দার (জাতীয় পার্টি-জাফর চেয়ারম্যান, পিরোজপুর-১)—বিএনপি ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছে।
- ফরিদুজ্জামান ফরহাদ (এনপিপি চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট সমন্বয়ক, নড়াইল-২)—আলোচনা ফলপ্রসূ।
- শাহাদাত হোসেন সেলিম (বাংলাদেশ এলডিপি সাবেক চেয়ারম্যান, লক্ষ্মীপুর-১)—সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।
এছাড়া ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটকে একটি করে আসন ছাড় দেয়া হয়েছে। ১২ দলীয় জোটকে আরও একটি আসনের আলোচনা চলছে। বৃহস্পতিবার এলডিপি, ৫ দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণফোরামের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আজ শুক্রবার এনডিএম, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য ও বিজেপির সঙ্গে, পরে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে বৈঠক বসবে। অনিবন্ধিত দলগুলোর প্রার্থীদের দল ছাড়ার প্রয়োজন নেই।
যারা নিজ প্রতীকে জোর দিচ্ছেন
কিছু নেতা নিজ দল ছাড়তে রাজি নন। তাদের তালিকা:
- মাহমুদুর রহমান মান্না (আসন অঘোষিত)—নিজ প্রতীক চান।
- সাইফুল হক (ঢাকা-৮ বা ঢাকা-১২)—ঢাকা-১২ পেলে ধানের শীষে রাজি।
- আন্দালিব রহমান পার্থ (আসন অঘোষিত)।
- জোনায়েদ সাকি (আসন অঘোষিত)।
- নুরুল হক নুর (আসন অঘোষিত)।
- অধ্যাপক ওমর ফারুক (এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল অলি আহমদের ছেলে, আসন অঘোষিত)—নিজ প্রতীক।
- ড. রেদোয়ান আহমেদ (এলডিপি মহাসচিব, আসন অঘোষিত)—নিজ প্রতীক।
এসব আসনে বিএনপি ছাড় দেবে। সাইফুল হক বলেন,
ঢাকা-৮-এ বিএনপির প্রার্থী থাকায় পরিবর্তন সম্ভব নয়, কিন্তু ঢাকা-১২ পেলে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবো।
কেন এ কৌশল?
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলেন, ছোট দলের প্রতীকে জয় কঠিন হওয়ায় তারকা নেতারা ধানের শীষে আগ্রহী। এতে ভোটের বাস্তবতা বাড়বে এবং জোটের শক্তি মজবুত হবে। বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, মোস্তফা জামাল ও ফরিদুজ্জামান ধানের শীষে নির্বাচন করবেন। এ কৌশল আগামী নির্বাচনে জোটের জয়ের নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।
সবার দেশ/কেএম




























