হাদির হত্যায় জাতিসংঘের নিন্দা: স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান
গত বছরের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা ও জুলাই বিপ্লবী-ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ডে জাতিসংঘ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি বাংলাদেশ সরকারকে এ হত্যার কারণ অনুসন্ধানে দ্রুত, নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্তের কঠোর আহ্বান জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জেনেভা থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক দেশে শান্তি বজায় রাখা এবং দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন।
জাতিসংঘের হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক বিবৃতিতে বলেন, গত বছর বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের একজন বিশিষ্ট নেতা শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি উল্লেখ করেন, গত সপ্তাহে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাদি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সবাইকে শান্ত থাকার এবং সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রতিশোধ কেবল বিভেদকে আরও গভীর করবে এবং সবার অধিকার ক্ষুণ্ন করবে, তিনি সতর্ক করেছেন।
ফলকার তুর্ক অন্তর্বর্তী সরকারকে হাদির মৃত্যুর কারণ নির্ধারণে দ্রুত তদন্ত পরিচালনার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে ইচ্ছুক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান নেতা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র। গত বছরের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তার নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলো। সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হওয়ার পর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এ হত্যাকাণ্ড দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে, যা জাতিসংঘের বিবৃতি এখন আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
জাতিসংঘের এ আহ্বান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো এবং সুশীল সমাজও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে চলেছে। ঘটনার পর দেশে শোকের ছায়া নেমেছে এবং সহিংসতার আশঙ্কা বেড়েছে। জাতিসংঘের হাইকমিশনারের এ বক্তব্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে এবং তদন্ত প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সবার দেশ/কেএম




























