গৃহকর্মী পলাতক, পুলিশ বলছে ‘টার্গেটেড ক্রাইম’
মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে কুপিয়ে নৃশংস হত্যা
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একই বাসা থেকে মা ও মেয়ের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারকে পুলিশ সম্ভাব্য ‘টার্গেটেড ডাবল মার্ডার’ হিসাবে বিবেচনা করছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে শাহজাহান রোডের একটি সাততলা ভবনের ফ্ল্যাটে ভয়াবহ এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহতরা হলেন—মালাইলা আফরোজ (৪৮) এবং তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজ (১৫)।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ধারণা করছে, বাড়ির গৃহকর্মীই তাদের কুপিয়ে হত্যা করেছে এবং পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে। তবে হত্যার উদ্দেশ্য—লুট, প্রতিশোধ নাকি আরও গভীর কোনো কারণ—তা এখনো পরিষ্কার নয়।
ঘটনাস্থলের বর্ণনা
পুলিশ জানায়, সকালে ফোন পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা ও তেজগাঁও বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ফ্ল্যাটের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিলো না। ঘরের শোবার ঘর ও বসার ঘর দু’জায়গা থেকেই রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘাতক অত্যন্ত নৃশংসভাবে আঘাত করেছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা
তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান—
আমাদের সন্দেহ গৃহকর্মীর দিকে। তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। সে-ই ঘটনার পরপরই পালিয়েছে। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে জানিয়েছেন—গৃহকর্মীকে মাত্র দুই–তিন মাস আগে নিয়োগ দিয়েছিলেন মালাইলা আফরোজ।
কেনো হত্যা?
পুলিশ বলছে তিনটি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে—
- লুটের উদ্দেশ্যে খুন – বাসার আলমারি ভাঙচুরের চিহ্ন আছে কিনা তা যাচাই করছে সিআইডি টিম।
- পারিবারিক বা ব্যক্তিগত ক্ষোভ – গৃহকর্মীর অতীত পরিচয় ও পারিবারিক পটভূমি জেনে দেখা হচ্ছে।
- প্রতিশোধ বা পরিকল্পিত টার্গেটেড ক্রাইম – বাড়ির মালিক পরিবারের সঙ্গে বাইরে কারও কোনও বিরোধ ছিলো কিনা তাও তদন্তে অন্তর্ভুক্ত।
ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক টিম কাজ করছে
লাশ দুইটি ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ফরেনসিক টিম বাসা থেকে রক্তের দাগ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও সম্ভাব্য অস্ত্রের নমুনা সংগ্রহ করছে।
নিরাপত্তাজনিত প্রশ্ন আবার সামনে
রাজধানীতে ধারাবাহিকভাবে গৃহকর্মী–সম্পর্কিত হত্যাকাণ্ড বা লুটের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আবারও প্রশ্ন উঠেছে—গৃহকর্মী নিয়োগে ন্যূনতম যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে কি?
পুলিশের বার্তা
পুলিশ বলছে, ঘাতক যেই হোক শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় শোক, আতঙ্ক এবং ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
সবার দেশ/কেএম




























