৯ সেপ্টেম্বরই হচ্ছে ডাকসু নির্বাচন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন পূর্বেই এ তারিখ ঘোষণা করলেও একটি রিটের কারণে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের ওপর চেম্বার জজ আদালতের দেওয়া আদেশ বহাল রেখে আপিল বিভাগ নির্ধারিত তারিখে নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করেছে।
বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, দুপুরে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর ফলে নির্বাচনের তফসিলে কোনো পরিবর্তন হয়নি, এবং ডাকসু নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর বেঞ্চ ডাকসু নির্বাচন ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন। তবে, প্রায় ৪৫ মিনিটের মধ্যেই চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিত করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে লেখা আবেদনের শুনানি শেষে তিনি এই সিদ্ধান্ত দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে আপিল বিভাগে আবেদন করার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ অনুসারে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করে।
আদালতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, এবং রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। গত ৩১ আগস্ট, বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করেন। হাইকোর্ট তাকে ফরহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ১৫ দিনের মধ্যে ডাকসুর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দাখিল করার নির্দেশ দেন।
গত ২৬ আগস্ট প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনে ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ২৮ জন স্বেচ্ছায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, এবং বাছাই প্রক্রিয়ায় ১০ জনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
চূড়ান্ত তালিকায় দেখা গেছে, সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন, এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন, এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন প্রার্থী রয়েছেন।
এছাড়াও, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা সদস্য পদে, যেখানে ২১৭ জন প্রার্থী লড়বেন। মোট ২৮টি পদে ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ এবং বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো ইতোমধ্যে আলাদা আলাদা প্যানেল ঘোষণা করেছে। প্রায় ১০টি পূর্ণ ও আংশিক প্যানেল এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এই নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সবার দেশ/এফও




























