সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা ও ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি
এইচএসসি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ঘোষণা
২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ফেল করা ও আশানুরূপ জিপিএ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের একাংশ রাস্তায় নামার ঘোষণা দিয়েছে। তারা সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা চালু, পূর্ণাঙ্গ খাতা পুনর্মূল্যায়ন ও নম্বর প্রদর্শনে স্বচ্ছতাসহ একাধিক দাবি তুলেছে।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনে গণজমায়েত করার ঘোষণা দিয়েছে তারা। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ও বিভিন্ন স্টুডেন্ট গ্রুপে আন্দোলনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) আন্দোলনের অন্যতম আহ্বায়ক শিক্ষার্থী সাইফুল্লাহ সাইফ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ কর্মসূচির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—
- এইচএসসি পরীক্ষায় সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা।
- বোর্ড চ্যালেঞ্জে কেবল খাতা পুনঃনিরীক্ষণ নয়, পূর্ণাঙ্গ পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
- এমসিকিউ, সিকিউ ও প্র্যাকটিক্যাল—সব অংশ মিলিয়ে খাতা রিচেক করতে হবে।
- ফেল করা বিষয়ে প্রতিটি অংশের (এমসিকিউ, সিকিউ, প্র্যাকটিক্যাল) আলাদা মার্ক প্রকাশ করতে হবে।
- সিকিউ ও এমসিকিউ মিলিয়ে সম্মিলিতভাবে পাসের সুযোগ দিতে হবে।
এর আগে গত ১৯ অক্টোবরও শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিলেও তা কার্যকর হয়নি। তবে এবার তারা ‘চূড়ান্ত কর্মসূচি’ পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
ফলাফলে রেকর্ডধস
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার মাত্র ৫৮.৮৩ শতাংশ। ২০০৪ সালের পর এটি সবচেয়ে কম পাসের হার।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রকাশিত ফলাফলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বড় ধস নেমেছে সিলেট বোর্ডে, যেখানে পাসের হার ৫১.৮৬ শতাংশ—গতবারের চেয়ে প্রায় ২৪ শতাংশ কম। গত বছর এই হার ছিলো ৮৫.৩৯ শতাংশ।
সবচেয়ে কম পাসের হার দেখা গেছে কুমিল্লা বোর্ডে—মাত্র ৪৮.৮৬ শতাংশ। গতবার সেখানে পাস করেছিলেন ৭১.১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডেও ধস নেমেছে রেকর্ড মাত্রায়; এবার পাস করেছে ৬২.৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা গতবারের তুলনায় ২৬ শতাংশ কম।
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার সবচেয়ে বেশি—৭৮.৭২ শতাংশ, যা গত বছর ছিলো ৯১.৩৩ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষায় পাসের হার ৫৫.৫৮ শতাংশ, আর মানবিক বিভাগে সবচেয়ে কম—৪৮.২৩ শতাংশ।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, এবার কঠোর মূল্যায়ন, নতুন প্রশ্নপদ্ধতি এবং নীতিগত পরিবর্তনের ফলে পাসের হার এভাবে কমে গেছে। তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করছে, এতে মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় অন্যায্যতা ও ত্রুটি হয়েছে—যারই প্রতিক্রিয়া তাদের আসন্ন আন্দোলন।
সবার দেশ/কেএম




























