নিউইয়র্কে মামদানি জিতলে তহবিল বন্ধ করবেন ট্রাম্প
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের শেষ প্রান্তে এসে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (৩ নভেম্বর) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ তিনি হুমকি দিয়েছেন, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মমদানি মেয়র নির্বাচনে জয়ী হলে শহরটির জন্য ফেডারেল তহবিল সীমিত করবেন।
ট্রাম্প লিখেছেন,
যদি কমিউনিস্ট প্রার্থী জোহরান মমদানি নিউইয়র্কের মেয়র হন, তাহলে আমি আমার প্রিয় শহর নিউইয়র্কের জন্য বাধ্যতামূলক সহায়তা ছাড়া আর কোনও ফেডারেল তহবিল দেবো না। একজন কমিউনিস্টের নেতৃত্বে শহরটির সাফল্যের কোনও সম্ভাবনা নেই— বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জোহরান মমদানি কুইন্স জেলার ৩৬তম আসনের প্রতিনিধি ও ডেমোক্র্যাট পার্টির সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আবাসন সংস্কার, গণপরিবহন সম্প্রসারণ এবং সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচির পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজেকে ‘ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট’ হিসেবে পরিচয় দিলেও ‘কমিউনিস্ট’ আখ্যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন, যা তার রক্ষণশীল সমালোচকরা প্রায়ই ব্যবহার করেন।
আগাম ভোট শেষ, আর মঙ্গলবার শহরের পাঁচ মিলিয়নেরও বেশি নিবন্ধিত ভোটার নিউইয়র্কের পরবর্তী মেয়র বেছে নিতে ভোট দেবেন। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, মমদানি এগিয়ে আছেন সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো ও রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে যৌন হয়রানির অভিযোগে গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করা কুয়োমো এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। গত জুনে অনুষ্ঠিত প্রাইমারিতে তিনি মমদানির কাছে পরাজিত হন।
ট্রাম্প তার পোস্টে রিপাবলিকান ভোটারদের উদ্দেশে লিখেছেন,
রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়াকে ভোট দেয়া মানে মমদানিকেই জয়ী করা। আপনারা যদি নিউইয়র্ক বাঁচাতে চান, তাহলে অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে ভোট দিন— পছন্দ করুন বা না করুন, এখন তার বিকল্প নেই।
প্রাইমারিতে জয়ের পর থেকেই মমদানি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে আলোড়ন তুলেছেন। তিনি সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস ও নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুলের মতো প্রভাবশালী নেতাদের সমর্থন পেয়েছেন। একইসঙ্গে ক্ষুদ্র দাতাদের কাছ থেকেও ধারাবাহিক আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন তিনি।
মমদানির প্রস্তাবিত নীতিগুলোর মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্কের ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধি, কর্পোরেট ট্যাক্স বাড়ানো, ভাড়ার হার স্থিতিশীল রাখা এবং সরকারি ভর্তুকিতে বাসস্থানের পরিমাণ বৃদ্ধি করা। এসব নীতিকে শহরের আর্থিক মহল উদ্বেগের চোখে দেখছে। তাদের মতে, এতে নিউইয়র্কের ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা দুর্বল হতে পারে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মমদানির উত্থান ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জন্য একই সঙ্গে ঝুঁকি ও সম্ভাবনা তৈরি করেছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে তার কঠোর অবস্থান রিপাবলিকানদের নতুন আক্রমণের সুযোগও তৈরি করেছে।
গত শনিবার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিউ জার্সিতে এক সমাবেশে অংশ নিয়ে মমদানির প্রতি সমর্থন জানান। ওবামার প্রচারদলের মুখপাত্র ডোরা পেকেক জানান, প্রেসিডেন্ট ওবামার সমর্থনে মমদানি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, নিউইয়র্কে এখন এক নতুন রাজনীতি গড়ে তোলার সময়।
সবার দেশ/কেএম




























