খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে তিন বাহিনী প্রধান
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ছুটে গেছেন তিন বাহিনীর প্রধান। রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বোচ্চ স্তরের এ অভূতপূর্ব উপস্থিতি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার পর সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে উপস্থিত হন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর–আইএসপিআরের মাধ্যমে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, ফুসফুস, কিডনি ও চোখের নানা জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি মুক্তি পান এবং এ বছর ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। সেখানে ১১৭ দিন চিকিৎসা শেষে ৬ মে দেশে ফিরে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকলেও, ২৩ নভেম্বর থেকে তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতি হতে থাকে। পরীক্ষায় ফুসফুসে ভয়াবহ সংক্রমণ ধরা পড়ে।
হাসপাতালের বাইরে দুপুরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়ার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হলেও চিকিৎসক দল সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি জনগণকে অনুরোধ করেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও ধরনের গুজব বা বিভ্রান্তি না ছড়াতে। তার ভাষায়,
তিনি চিকিৎসকদের চিকিৎসা গ্রহণ করছেন, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। দয়া করে সবাই শান্ত থাকুন।
ডা. জাহিদ আরও জানান, যুক্তরাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তারা যেকোনও সময়ে মূল্যায়ন করবেন—বর্তমান অবস্থায় বিদেশে স্থানান্তর প্রয়োজন কি না।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (Very Very Important Person) হিসেবে ঘোষণা করে। তার নিরাপত্তা, চলাচল এবং চিকিৎসা–সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম এখন বিশেষ পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
রাষ্ট্রযন্ত্রের শীর্ষ পর্যায়ের এ সক্রিয়তা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার গুরুত্বই শুধু তুলে ধরেনি, বরং আসন্ন রাজনৈতিক সমীকরণ ও ক্ষমতার পরিবর্তনশীল বাস্তবতাকেও আবার নতুন করে সামনে এনে দিয়েছে।
সবার দেশ/কেএম




























