দ্রুত আইন সংশোধনের তাগিদ
তামাক নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি পূরণে এগিয়ে বাংলাদেশ
তামাক নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এশিয়ায় একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম এবং একমাত্র দেশ হিসেবে সিগারেট ফিল্টারকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বা সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (ডব্লিএইচও এফসিটিসি)-এর পরিবেশ সুরক্ষা–সংক্রান্ত আর্টিকেল ১৮ অনুযায়ী কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ (কপ)-১০ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এ যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ সরকার।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত ‘ট্রান্সলেটিং ডব্লিএইচও এফসিটিসি কপ ডিসিশনস ইনটু অ্যাকশন ইন বাংলাদেশ: এ কেস স্টাডি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত কপ-১১ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সিগারেট ফিল্টারকে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক হিসেবে ঘোষণার সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনসহ এ খাতে কার্যক্রম আরও জোরদার করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করা হয়।
ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারী তামাকবিরোধী নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সময় কপ সম্মেলনে অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তারা কপ-১১ এ গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য সরকার, সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
আলোচনায় তুলে ধরা হয়, তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ক্যানসার, স্ট্রোক, হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, তামাক ব্যবহার ও উৎপাদনের ফলে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ খাতে যে ক্ষতি হয়, তার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ৮৭ হাজার কোটি টাকা, যা তামাক খাত থেকে সরকারের প্রাপ্ত রাজস্বের দ্বিগুণেরও বেশি।
বক্তারা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ডব্লিএইচও এফসিটিসি-এর আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এ আইন সংশোধন বিলম্বিত হলে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব—জনস্বাস্থ্যের অবনতি, পরিবেশ দূষণ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক ক্ষতি—আরও বাড়বে। এ কারণে অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী চূড়ান্ত করে কার্যকর করার জোরালো দাবি জানান তারা।
ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বিসিআইসি-এর সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট-এর নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস বাংলাদেশ-এর জ্যেষ্ঠ কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা)-এর কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আত্মা’র কনভেনর মতুর্জা হায়দার লিটন। প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রোগ্রাম অফিসার রোকাইয়া আব্দুল্লাহ রাকা। মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞার কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার।
সবার দেশ/কেএম




























