মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যাকারী গৃহকর্মী আয়েশার স্বীকারোক্তি
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মূল আসামি গৃহকর্মী আয়েশা আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ স্বীকারোক্তি পুলিশের তদন্তে নতুন মোড় এনেছে এবং হত্যার পেছনের কারণ ও পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোকপাত করতে পারে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনমূলক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
রিমান্ডকালীন জবানবন্দির পর আয়েশাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান প্রসিকিউশন পুলিশের উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান। মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক সহিদুল ওসমান মাসুম রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে হাজির করেন। আয়েশা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিতে সম্মতি জানান, যা আদালত রেকর্ড করে। এর আগে তার স্বামী রাব্বিও ১৪ ডিসেম্বর আদালতে একই ধরনের জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত ৫ ডিসেম্বর যখন আয়েশা খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে নিহত লায়লা ফিরোজের স্বামী এ জেএম আজিজুল ইসলামের বাসায় কাজ শুরু করেন। গত ৮ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় আজিজুল কর্মস্থলে যান। স্ত্রীর মোবাইলে যোগাযোগ না পেয়ে বেলা ১১টায় বাড়ি ফিরে তিনি ভয়ংকর দৃশ্য দেখেন— স্ত্রী লায়লা গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম নিয়ে মৃত, আর মেয়ে গলার ডানদিকে ছুরিকাটা নিয়ে মেইন গেটের দিকে পড়ে আছে। মেয়েকে তিনি উদ্ধার করে পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. আশিকের সাহায্যে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন, কিন্তু চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয় যে, আয়েশা সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাড়িতে প্রবেশ করেন এবং ৯টা ৩৫ মিনিটে একটি মোবাইল, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে যান। এ সময়ের মধ্যে অজ্ঞাত কারণে ছুরি বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ এজাহারের ভিত্তিতে আজিজুল ৮ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ১০ ডিসেম্বর ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ফুফুশাশুড়ির বাড়ি থেকে আয়েশা ও তার স্বামী রাব্বিকে গ্রেফতার করে। পরদিন আদালত আয়েশার ৬ দিনের এবং রাব্বির ৩ দিনের রিমান্দ মঞ্জুর করে। তদন্তকারীরা জানান, স্বীকারোক্তি থেকে হত্যার সঠিক কারণ ও ঘটনার বিবরণ আরও স্পষ্ট হবে। এদিকে, এ নৃশংস হত্যা এলাকায় আতঙ্কের সঞ্চার করেছে এবং স্থানীয়রা নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন।
সবার দেশ/কেএম




























