ডাকসু নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভোটের দিন সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। গণনার সময়ও তারা ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করবেন।
চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রধান প্রবেশপথে সেনাসদস্যরা মোতায়েন থাকবে। ভোটগ্রহণ শেষে ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র কর্ডন করে রাখা হবে, যাতে বাইরের কেউ প্রবেশ করতে না পারে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো যায়।
মেট্রোরেল স্টেশন বন্ধ, বহিরাগতদের নিষেধাজ্ঞা
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভোটের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোরেল স্টেশন বন্ধ থাকবে। এছাড়া নির্বাচনের সাত দিন আগে থেকেই হলগুলোতে কোনো বহিরাগত অবস্থান করতে পারবে না।
এদিকে মঙ্গলবার (২৬ আগষ্ট) থেকে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রার্থীরা ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচার চালাতে পারবেন। ছাত্রীদের হলে প্রচারের সময়সীমা রাত ১০টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
আচরণবিধি ভাঙলে প্রার্থিতা বাতিল
নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রার্থীরা শুধুমাত্র সাদা-কালো পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ব্যবহার করতে পারবেন। কোনও পোস্টারে প্রার্থীর নিজস্ব ছবি ছাড়া অন্য কোনো ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না। ক্যাম্পাসের দেয়াল, স্থাপনা, যানবাহন, গাছপালা বা বৈদ্যুতিক খুঁটিতে পোস্টার লাগানো নিষিদ্ধ। ফটক, তোরণ, ঘের নির্মাণ বা আলোকসজ্জা করা যাবে না, তবে অস্থায়ী প্যান্ডেল ও মঞ্চ করা যাবে।
ধর্মীয় উপাসনালয়, শ্রেণিকক্ষ, পাঠকক্ষ ও পরীক্ষার হলে প্রচারণা চালানো যাবে না। ভোটারদের উপঢৌকন দেয়া, উসকানিমূলক বক্তব্য, গুজব ছড়ানো এবং আক্রমণাত্মক মন্তব্যও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সভা-সমাবেশ বা শোভাযাত্রা করতে হলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে।
ভোটের দিন প্রচারে খাবার বা পানীয় পরিবেশন করা যাবে না। প্রতিটি হলে একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তিনটি প্রজেকশন মিটিংয়ের সুযোগ থাকবে। অনলাইন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আইনসম্মত প্রচার চালানো যাবে। তবে বহিরাগত কেউ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না।
আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারসহ আইনগত শাস্তির বিধান রয়েছে।
সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বাড়তি নিরাপত্তা
সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান, প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. জসীম উদ্দিন, রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বৈঠকে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গণনা নিশ্চিত করতে বিশেষ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে এবং একই দিন ফল ঘোষণা করা হবে।
সবার দেশ/কেএম




























