মওলানা ভাসানী ও ওসমান হাদির ছবি টাঙিয়ে বিজয় র্যালি
বিজয় দিবসে ধানমন্ডি ৩২-এ ভিন্ন বার্তার কর্মসূচি
মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে রাজধানীতে ব্যতিক্রমী এক কর্মসূচি পালন করেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতারা। জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা আরিফ সোহেলের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বিজয় র্যালি শেষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙা বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণআন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ছবি টানিয়ে কর্মসূচি পালন করা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বিপ্লবী নেতা সিরাজ সিকদার, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খান, মেজর এম এ জলিল এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতা শরীফ ওসমান হাদির ছবি টাঙানো হয়। আয়োজকদের ভাষ্য অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধ ও গণসংগ্রামের ইতিহাসে যাদের ভূমিকা ‘অদৃশ্য’ করার চেষ্টা হয়েছে, তাদের স্মরণ করতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আরিফ সোহেল বলেন, পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের মুখে আওয়ামী লীগ কাপুরুষের মতো পালিয়ে গিয়েছিলো। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কোনও দল বা পরিবারের সম্পত্তি ছিলো না। এটি ছিলো এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র ও সাধারণ মানুষের জনযুদ্ধ।
তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলে মুক্তিযুদ্ধকে শেখ পরিবার ও আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র সম্পত্তিতে পরিণত করা হয়েছিলো। অথচ পাক হানাদারদের আক্রমণের মুখে পালিয়ে যাওয়া নেতৃত্বের অপেক্ষা না করেই দেশের আপামর জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অস্ত্র হাতে তুলে নেয় এবং সে জনযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যায়। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ভারতীয় আধিপত্যবাদের মুখে জনগণ আবার নতুন করে প্রতিরোধ ও সংগ্রাম গড়ে তুলতে বাধ্য হয়।
আরিফ সোহেল আরও বলেন, একাত্তরের জনযুদ্ধ এবং তার পরবর্তী রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস থেকে যাদের সচেতনভাবে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে—সে সিরাজ সিকদার, সিরাজুল আলম খান, মেজর জলিল, মওলানা ভাসানী এবং আজকের সময়ের সংগ্রামের পথিকৃৎ শরীফ ওসমান হাদিকে স্মরণে রেখেই এ বিজয় র্যালি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে শেখ পরিবার ও আওয়ামী ন্যারেটিভের কবল থেকে বের করে এনে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার সংগ্রামকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলতে চাওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ভবিষ্যতেও এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে এবং মুক্তিযুদ্ধ ও গণআন্দোলনের বিকল্প ইতিহাস তুলে ধরার প্রচেষ্টা জোরদার করা হবে।
কর্মসূচিতে অংশ নেয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতাকর্মীরা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো সশস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সবার দেশ/কেএম




























