ঐক্যের আহ্বান নাহিদ ইসলামের
বিজয় দিবসে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ডাক
মহান বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, বিজয় দিবসে উৎসব নয়, প্রতিরোধের র্যালির মাধ্যমে রাজপথে নামবে জনগণ।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত এক সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। সমাবেশটি সংগঠনের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদ এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজন করা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামীকাল বিজয় দিবসে আমরা প্রতিরোধের র্যালি করব। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এবং বাংলাদেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হব। আমরা উৎসব করতে রাস্তায় নামবো না, আমরা প্রতিরোধের যাত্রায় রাস্তায় নামবো।
সমাবেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণজুড়ে ছিলো প্রতিবাদী স্লোগান ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ।
১৯৭১ সালের বিজয় ও প্রতিরোধের ধারাবাহিকতা টেনে নাহিদ ইসলাম বলেন, ১৬ ডিসেম্বর আমরা যেমন বিজয় অর্জন করেছি, তেমনি সেদিন থেকেই আমাদের প্রতিরোধের যাত্রাও শুরু হয়েছিলো। সে প্রতিরোধ ছিলো ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া সে প্রতিরোধ আজও চলমান।
ভারতের রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে কড়া ভাষায় তিনি বলেন, ভারত যদি মনে করে ৫ আগস্টের পরেও তারা আগের মতো বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে, নির্বাচনে কারচুপি করবে—তাহলে তারা ভুল ভাবছে। সে ভুল আমরা প্রমাণ করবো। ভারতকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্মান ও মর্যাদার ভিত্তিতে সম্পর্ক রাখতে হবে।
ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয় বলে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আজকের এ সমাবেশের মাধ্যমে আমরা একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই—বাংলাদেশ ও জুলাই বিপ্লবীরা ঐক্যবদ্ধ। ওসমান হাদির শরীরে গুলি লাগার মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবই আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ যতবার আক্রান্ত হয়েছে, তরুণরা ততবার রাজপথে নেমে এসেছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এনসিপির এ নেতা। তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে আমরা দেখেছি কীভাবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিরোধী দল ও মত দমনে ব্যবহার করা হয়েছে। সে সংস্থাগুলো তখন গুম-খুনসহ সবকিছু অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করতে পেরেছে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করে সে দক্ষতা কোথায় উধাও হয়ে গেছে, সেটাই প্রশ্ন।
তিনি আরও বলেন, এখন তারা কাউকে গ্রেফতার করতে পারে না, সীমান্ত পার হওয়া ঠেকাতে পারে না, ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও একজন অপরাধীকেও ধরতে পারে না। ফলে প্রশ্ন শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ঘিরে নয়। এ খেলা কোথা থেকে চলছে, সে ডিপ স্টেট ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও কথা বলতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ চাই। আমরা চাই গণতন্ত্রের যাত্রা অব্যাহত থাকুক। কিন্তু যারা জুলাই বিপ্লবকে টার্গেট করছে, যারা মিডিয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ও আদালত অঙ্গনে মুজিববাদী রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে—তাদের বিরুদ্ধে আমাদের গণপ্রতিরোধ চলবে।
সবার দেশ/কেএম




























