স্বজনদের মুখে স্বস্তির হাসি
মানবপাচারের শিকার ৩০৯ বাংলাদেশির লিবিয়া থেকে ফেরা
লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি ও আশপাশের অঞ্চল থেকে অবৈধভাবে অবস্থানরত ৩০৯ বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মানবপাচারের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা পেরিয়ে এ বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ফ্লাই ওয়া ইন্টারন্যাশনালের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে করে তারা ঢাকায় পৌঁছান। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে সেখানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর কর্মকর্তারা তাদের স্বাগত জানান।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ফিরে আসা অধিকাংশ নাগরিক মানবপাচারকারীদের প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন। ইউরোপে সমুদ্রপথে পৌঁছে দেওয়ার প্রলোভনে পড়ে তারা লিবিয়ায় গিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে সেখানে তারা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। অনেকে অপহরণ, জিম্মি ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। কেউ কেউ মাসের পর মাস অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটিয়েছেন স্থানীয় মিলিশিয়া ও পাচারচক্রের হাতে।
প্রত্যাবাসনের পর আইওএম তাদেরকে খাদ্যসামগ্রী, পোশাক ও প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে। পাশাপাশি মনোসামাজিক সহায়তার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে, যাতে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফিরে আসা নাগরিকদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে অন্যরা মানবপাচারের ফাঁদে না পড়েন। সচেতনতা বাড়াতে এ বাস্তব অভিজ্ঞতাগুলো সরকার তথ্যচিত্র ও প্রচারণা কার্যক্রমে ব্যবহার করবে বলে জানা গেছে।
লিবিয়ায় এখনও বহু বাংলাদেশি আটক বা বিপদে রয়েছেন। তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও আইওএম যৌথভাবে কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মানবপাচার প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সরকার ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং বিপদগ্রস্ত অভিবাসীদের মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
দেশে ফিরে আসা এক তরুণ বলেন,
আমাদের বলা হয়েছিলো ইউরোপ নিয়ে যাবে, কিন্তু নিয়ে গেছে মৃত্যুর মুখে। আমরা ভাগ্যবান যে বেঁচে ফিরেছি।
লিবিয়া থেকে এসব বাংলাদেশির দেশে ফেরাকে মানবিক সাফল্য হিসেবে দেখছে সরকার। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মানবপাচার প্রতিরোধে আরও কঠোর নজরদারি ও জনসচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করা হবে।
সূত্র: বাসস
সবার দেশ/কেএম




























