বিদ্রোহী কবির পাশে চিরনিদ্রায় বিপ্লবী হাদি
শহীদ হাদির এপিটাফে যা লেখা আছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসংলগ্ন সমাধিতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের ঠিক দক্ষিণ পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই বিপ্লবের অকুতোভয় যোদ্ধা শহীদ শরিফ ওসমান হাদি। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় মর্যাদায় তার দাফন সম্পন্ন হয়।
দাফন শেষে শহীদ হাদির কবরের ওপর একটি সমাধিস্তম্ভ লিপি বা এপিটাফ স্থাপন করা হয়েছে। অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত অথচ তাৎপর্যপূর্ণ সে লিপিতে লেখা হয়েছে:
আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদি। (১৯৯৩-২০২৫)। শাহাদাত: ১৮ ডিসেম্বর-২০২৫।
এ লিপিটি আগামী প্রজন্মের কাছে হাদির আত্মত্যাগ এবং তার রাজনৈতিক দর্শনের সাক্ষী হিসেবে থাকবে বলে মনে করছেন তার সহযোদ্ধারা।
এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যা এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিলো। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এ জানাজায় ইমামতি করেন হাদির বড় ভাই ডা. আবু বকর সিদ্দিক। জানাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক, বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা এ বীর সন্তানকে শেষ বিদায় জানাতে উপস্থিত হন।
জানাজার আগে দেয়া বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদ হাদিকে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেন। হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক এবং ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের তাদের বক্তব্যে হাদির অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
জানাজা শেষে কফিনবাহী গাড়িটি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পৌঁছায়, তখন সেখানে উপস্থিত হাজারো শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিদ্রোহী কবির পাশেই ঠাঁই হলো সমকালের এ তরুণ বিদ্রোহীর। এ দাফন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটলো বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম এক শোকাবহ অধ্যায়ের।
সবার দেশ/কেএম




























