রাজধানীজুড়ে কড়া নিরাপত্তা, ঢাকায় প্রবেশে তল্লাশি জোরদার
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের রায় ঘোষণার দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসতেই রাজধানীজুড়ে চূড়ান্ত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এ ঐতিহাসিক রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
রায়কে ঘিরে ‘লকডাউন’ কর্মসূচি দিয়েছে বর্তমানে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। সম্ভাব্য সহিংসতা ও নাশকতা ঠেকাতে বুধবার সকাল থেকেই ঢাকা কার্যত কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে পরিণত হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, প্রবেশপথ ও সংবেদনশীল স্থানে বসানো হয়েছে অতিরিক্ত চেকপোস্ট, চলছে টানা তল্লাশি।
বিজিবি সূত্র জানায়, রাজধানীর কৌশলগত ১২টি পয়েন্টে বিজিবির ১২ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এয়ারপোর্ট, আব্দুল্লাহপুর, ধানমণ্ডি ৩২, কাকরাইল, হাইকোর্ট, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বিচারিক এলাকা। প্রতিটি মোড়ে পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে যৌথভাবে টহল দিচ্ছে বিজিবি।
পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও পিকআপ থামিয়ে চালক-যাত্রীর পরিচয়পত্র যাচাই করা হচ্ছে। যেসব এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিচ্ছেন বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে, সেসব স্থানে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাতের অভিযানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ আওয়ামী লীগের ৪৪ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। ডিএমপির আটটি অপরাধ বিভাগ পৃথক অভিযানে আরও কয়েকজনকে আটক করে।
রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হচ্ছে। গতরাতে কলাবাগানের একটি মেস থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা নাশকতার পরিকল্পনায় ঢাকায় এসেছিলো বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়া ফকিরাপুল, বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউ, এলিফ্যান্ট রোড, কাকরাইলসহ বিভিন্ন এলাকার আবাসিক হোটেল ও মেসে অভিযান চালিয়ে অতিথিদের পরিচয়পত্র, পেশা ও ঢাকায় আসার উদ্দেশ্য যাচাই করেছে পুলিশ। সন্দেহভাজনদের মোবাইল ফোনও পরীক্ষা করা হয়েছে, তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কি না তা যাচাই করতে।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। যাদের বিরুদ্ধে পূর্বের মামলা বা অভিযোগ রয়েছে, তাদের সিডিএমএস ডাটাবেজে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। অনেকের বিরুদ্ধেই আগের নাশকতা বা সহিংসতার মামলা পাওয়া গেছে।
বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবারের ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে যেকোনও ধরনের সহিংসতা বা অস্থিতিশীলতা প্রতিরোধে মাঠে রয়েছে বিজিবি। কেউ যদি নাশকতার চেষ্টা করে, তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করছে প্রশাসন। তবে বৃহস্পতিবারের রায় ঘিরে রাজধানী ঢাকায় উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠা দুই-ই বাড়ছে।
সবার দেশ/কেএম




























