গুলশানে ফ্ল্যাট দখল মামলা
টিউলিপসহ দুইজনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট
রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড নির্মিত একটি ফ্ল্যাট বিনা অর্থপরিশোধে দখলের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ভারতে পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খুনি হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে ও সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল দায়ের করা মামলার চার্জশিট বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুদক কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দেয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর শিগগিরই অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক ছাড়াও রয়েছেন রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা সরদার মোশাররফ হোসেন। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মালিক জহুরুল ইসলাম এবং রাজউকের সাবেক আইন উপদেষ্টা ও সাবেক গৃহায়নমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ সেলিম ইতোমধ্যে মারা যাওয়ায় তাদের নাম অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
তদন্তে উঠে এসেছে যা
দুদকের তদন্তে জানা যায়, গুলশান-২ এর ৭১ নম্বর রোডে অবস্থিত ১১এ ও ১১বি নম্বর ফ্ল্যাটটি কোনো মূল্য পরিশোধ ছাড়াই নেয়া হয়েছিলো। সংশ্লিষ্ট প্লটটি রাজউকের মালিকানাধীন এবং দীর্ঘমেয়াদি লিজে থাকায় তা হস্তান্তরযোগ্য ছিলো না। তবুও টিউলিপ সিদ্দিক রাজউকের এক কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করে ইস্টার্ন হাউজিংকে আমমোক্তার অনুমোদন করিয়ে প্লটটিতে ফ্ল্যাট নির্মাণ ও বিক্রির সুযোগ করে দেন।
দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, অবৈধ সুবিধা প্রদান ও গ্রহণের মাধ্যমে যৌথ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিককে ফ্ল্যাটটি ‘বিনা মূল্যে গ্রহণে সহায়তা’ করা হয়।
কর নথিতেও অনিয়ম
তদন্তে আরও বেরিয়ে এসেছে, টিউলিপ সিদ্দিক ২০০৬–০৭ করবর্ষ থেকে ২০১৮–১৯ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা দিলেও ফ্ল্যাটটি ২০১৫–১৬ করবর্ষ পর্যন্ত কর নথিতে দেখাননি। বরং ডেভেলপার কোম্পানিকে অগ্রিম বাবদ ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন বলে ‘মিথ্যা তথ্য’ উপস্থাপন করেন।
এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, ২০১৫–১৬ করবর্ষে ফ্ল্যাটটি ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিককে ‘হেবা’ করেছেন। কিন্তু আয়কর নথিতে দেয়া হেবা দলিলটি নোটারি পাবলিক প্রত্যায়িত হলেও তদন্তে তা জাল প্রমাণিত হয়েছে।
আরেক আসামির বিষয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ
মামলার ২ নম্বর আসামি শাহ খসরুজ্জামান হাইকোর্টে কোয়াশমেন্টের আবেদন করার পর আদালত তার বিরুদ্ধে তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন। আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত ‘নো অর্ডার’ দেয়ায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল আপাতত স্থগিত থাকছে।
দুদক জানিয়েছে, হাইকোর্টের মিস কেস নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শাহ খসরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়; তবে অন্য দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযুক্ত সব উপাত্ত নিশ্চিত হওয়ায় চার্জশিট দাখিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সবার দেশ/কেএম




























