বজ্রপাতে প্রাণহানি এড়াতে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
বজ্রপাতজনিত প্রাণহানি ও আহতদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবিতে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) মানবাধিকার সংগঠন ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট’ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার-এর পক্ষে রিটটি দাখিল করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব।
রিটে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব, পরিবেশ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পরিকল্পনাসচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সাল থেকে বজ্রপাতকে সরকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করলেও এখন পর্যন্ত কোনও কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা দেখা যায়নি। অথচ গবেষণায় দেখা গেছে, বজ্রপাতে নিহতের হার এখন বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসের চেয়েও বেশি। নিহতদের মধ্যে কৃষক, জেলে এবং খোলা জায়গায় কাজ করা গ্রামীণ জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি।
প্রস্তাবিত প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- বজ্রপাত সচেতনতা বাড়াতে জাতীয় পর্যায়ে প্রচার-প্রচারণা
- আগাম বার্তা প্রচারের জন্য টেলিযোগাযোগব্যবস্থা চালু
- বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ
- তালগাছ রোপণ কার্যক্রম চালু
- মোবাইলে এসএমএস সতর্কতা ব্যবস্থা
- বজ্র নিরোধক যন্ত্র স্থাপন
- বজ্রপাত থেকে বাঁচার কৌশল লিফলেট আকারে বিতরণ
ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন,সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জীবন রক্ষার অধিকার মৌলিক মানবাধিকার। কিন্তু বজ্রপাতে প্রাণ হারানো মানুষদের মধ্যে অধিকাংশই দরিদ্র শ্রেণির—তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্র এড়িয়ে যেতে পারে না। এটি এক ধরনের কাঠামোগত বৈষম্য। রাষ্ট্রের উচিত, এসব অঞ্চলের জন্য প্রযুক্তি-নির্ভর ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা।
আইনজীবী আরও জানান, এ বিষয়ে বিবাদীদের বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও সাড়া না পেয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন তারা। আদালত রিট গ্রহণ করলে দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছর মার্চ থেকে মে মাসে বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়। বিশেষ করে হাওর অঞ্চল, চর ও নদী উপকূলবর্তী এলাকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে।
এ রিট রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ব পালনের এক গুরুত্বপূর্ণ আইনগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সবার দেশ/কেএম




























