Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:১১, ১৩ মে ২০২৫

হাইকোর্টের রুল জারি

‘মুসলিম ফারায়েজ অনুযায়ী বণ্টনের নির্দেশ কেন নয়?’

‘মুসলিম ফারায়েজ অনুযায়ী বণ্টনের নির্দেশ কেন নয়?’
ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিজীবী কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে, তার প্রভিডেন্ট ফান্ড, এককালীন পেনশন ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা শুধুমাত্র নমিনিকে না দিয়ে মৃতের মুসলিম ওয়ারিশদের মধ্যে ইসলামী শরিয়তের (ফারায়েজ) বিধান অনুযায়ী আনুপাতিক হারে বণ্টন কেন করা হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।

আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিট আবেদনটি করেন মৃত এক সরকারি কর্মচারীর প্রথম পক্ষের সন্তানরা। আবেদনকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব জানান, তাদের বাবা চাকরিরত অবস্থায় মারা যান। বাবার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। পরবর্তীতে জানা যায়, তাদের বাবা মৃত্যুর আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নমিনি করেছিলেন এবং ওই স্ত্রী এককভাবে বাবার রেখে যাওয়া সব আর্থিক সুবিধাদি দাবি করছেন।

রিট আবেদনকারীরা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোনো পদক্ষেপ পাননি। এরপর হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

আদালত জানতে চেয়েছে, মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি যদি মুসলিম হন, তাহলে তার সম্পদ—including প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, এককালীন পেনশন ইত্যাদি—নমিনির নামে থাকলেও তা কি শরিয়াহর ওয়ারিশানার ভিত্তিতে ভাগ হবে না? রাষ্ট্র ও প্রশাসনের ভূমিকা কী হওয়া উচিত?

রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শফিকুর রহমান শুনানি করেন। তাকে সহযোগিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ, অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল কবির এবং অ্যাডভোকেট মো. ঈসা।

ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, নমিনি হচ্ছে কেবল অর্থ গ্রহণের জন্য মনোনীত ব্যক্তি। এতে তার মালিকানা নিশ্চিত হয় না। মালিকানা নির্ধারিত হয় শরিয়াহ বা উত্তরাধিকার আইনের ভিত্তিতে। আদালত এ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে রুল জারি করায় আমরা সন্তুষ্ট। আশা করছি, ন্যায়ের ভিত্তিতে রায় হবে।

এ রুলের মূলে রয়েছে দীর্ঘদিনের একটি বিতর্ক: সরকারি চাকরিজীবী মৃত্যুবরণ করলে তার আর্থিক সুবিধা কেবলমাত্র নমিনি পাবেন, নাকি ওয়ারিশানার ভিত্তিতে সব উত্তরাধিকারীর মধ্যে বণ্টন হবে? এ রুল ভবিষ্যতে এমন অসংখ্য মামলার দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।

সবার দেশ/কেএম