জবি ছাত্র জুবায়েদ খুন
‘স্যারকে তুমি মেরে ফেলো’, প্রেমিক যুগলের জবানবন্দি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জুবায়েদ হোসেনকে হত্যার ঘটনায় তার প্রেমিকা বার্জিস শাবনাম বর্ষাসহ তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্যান্য আসামিরা হলেন বর্ষার আরেক প্রেমিক মো. মাহির রহমান এবং মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বংশাল থানার উপপরিদর্শক মো. আশরাফ হোসেনের মাধ্যমে এ জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করা হয়। আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, মাহির ও বর্ষার মধ্যে দেড় বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। এরপর প্রায় এক বছর আগে জুবায়েদ বর্ষার টিউশনি করাতে আসেন। এক পর্যায়ে বর্ষার সঙ্গে জুবায়েদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা মাহির মেনে নিতে পারেননি। ঘটনার এক মাস আগে বর্ষা মাহিরকে বলেন,
স্যারকে তুমি মেরে ফেলো, আমি আর সহ্য করতে পারছি না।
মাহির ও বর্ষা জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। বর্ষা জোবায়েদের বাসায় যাওয়ার সময়সূচি মাহিরকে জানাতেন। মাহির তার বন্ধু আয়লানের সঙ্গে জগতকর্মের জন্য একটি সুইচ গিয়ার চাকু কিনে নেন। রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে জোবায়েদ টিউশন দিতে গেলে মাহির ও আয়লান বাসার নিচতলার সিঁড়িতে ওত পেতে ছিলেন। মাহির জুবায়েদের প্রশ্ন করেন, আপনি বর্ষার সঙ্গে সম্পর্ক করেন কেনো? কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে মাহির ব্যাগ থেকে সুইচ গিয়ার চাকু বের করে জুবায়েদের গলার ডান পাশে আঘাত করেন, যার ফলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় বর্ষা তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।
ঘটনার পর ঢাকার মেট্রোপলিটন মাজিস্ট্রেটরা বর্ষা, মাহির ও আয়লানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে তাদের কারাগারে পাঠান। এছাড়া একজন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, জুবায়েদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করাতেন। নিহত হওয়ার দিন, ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বংশাল থানার ৩১ নম্বর ওয়ার্ড, নুর বক্স লেনের রৌশান ভিলায় পড়ানোর জন্য যান। সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে বর্ষা তার ভাই সৈকতকে ম্যাসেঞ্জারে জানান, জুবায়েদ স্যার খুন হয়ে গেছে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে জুবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেন ঘটনাস্থলে যান এবং সিঁড়ি ও দেয়ালে রক্তের দাগ দেখে তৃতীয় তলার রুমে জুবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উপুড় অবস্থায় পান।
ময়নাতদন্ত শেষে জুবায়েদের কুমিল্লার কৃষ্ণপুর গ্রামে দাফন করা হয়। ওই ঘটনায় জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসত বাদী হয়ে বংশাল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
প্রাথমিক তদন্তে স্বীকারোক্তি, প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য ও সিসিটিভি ফুটেজের প্রমাণ হত্যাকাণ্ডে তিনজনের সরাসরি জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সবার দেশ/কেএম




























