তিন দফা দাবিতে কাকরাইলে অবস্থান
জবি শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনেও রাজপথে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন দ্বিতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল থেকে তারা রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। গতকাল বুধবার দুপুরে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের বাধা, লাঠিপেটা ও টিয়ারগ্যাস ছোঁড়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ১০ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন দিক থেকে ছাত্রছাত্রীরা জড়ো হতে থাকেন। ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রাকিব হাসান জানিয়েছেন, সকালে তিনটি বাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিতে আসেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকেও আরও অনেকে আসছেন।
সড়কের উপর শুয়ে, বসে ও দাঁড়িয়ে তারা বিভিন্ন স্লোগানে মুখর করে তোলেন কাকরাইল এলাকা। স্লোগান ছিলো—
- আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম
- লড়াই করে বাঁচতে চাই
- রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়
- দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেবো রক্ত
গতকালের ঘটনার প্রতিবাদে আজকের কর্মসূচি আরও কঠিন ও সংগঠিতভাবে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও এ পর্যন্ত কোনো সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি:
- আবাসন ভাতা: ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে জবির ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু করতে হবে, যতদিন না স্থায়ী আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত হয়।
- বাজেট সংরক্ষণ: প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেটে কোনো ধরনের কাটছাঁট না করে তা অনুমোদন করতে হবে।
- দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস স্থাপনের প্রকল্পকে একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে।
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। ব্যারিকেড ভেঙে তারা যমুনা (উপদেষ্টার বাসভবন) লক্ষ্য করে এগোতে চাইলে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে, পরে ছোঁড়ে কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
শিক্ষকদের সংহতি
আন্দোলনের প্রতি একাংশ শিক্ষক সংহতি প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, এ দাবিগুলো বাস্তবসম্মত এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। তাদের ভাষায়— এটা শুধু তিনটি দাবি না, এটি আমাদের মর্যাদা ও ভবিষ্যতের প্রশ্ন।
সবার দেশ/কেএম