‘টিকটকে আসক্ত’ স্ত্রীকে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে লাশ লুকালেন স্বামী
টিকটকে নাচের ভিডিও প্রকাশকে কেন্দ্র করে দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। হত্যার পর মরদেহ গুম করতে বাড়ির বাথরুমের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে দেন তিনি। পরে বিষয়টি আড়াল করতে থানায় নিখোঁজের অভিযোগও করেন। অবশেষে পুলিশের ছায়া তদন্তে রহস্য উদঘাটন হয় এবং স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়া সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়নের নুরুইল মধ্যপাড়া এলাকায়। নিহত গৃহবধূর নাম মারুফা আক্তার (২৫)। তিনি একই উপজেলার লাহেড়ীপাড়া ইউনিয়নের নন্দীপাড়া পীরগাছা এলাকার মাহবুব আলমের মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামী মুকুল মিয়া (৩১) পেশায় ঢালাই মিস্ত্রি এবং নুরুইল মধ্যপাড়ার শাজাহান আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৯ বছর আগে পারিবারিকভাবে মুকুল মিয়ার সঙ্গে মারুফার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিলো। স্বামীর নিষেধ সত্ত্বেও মারুফা টিকটকে ভিডিও করতেন। সম্প্রতি গত ১১ ডিসেম্বর মারুফা তার চাচাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে নাচের একটি ভিডিও টিকটকে প্রকাশ করেন। এ নিয়ে ১৩ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ক্ষোভে মুকুল মিয়া গলা টিপে মারুফাকে হত্যা করেন।
হত্যার পর লাশ গোপন করতে বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে মুখ সিমেন্ট দিয়ে প্লাস্টার করে দেন মুকুল। বিষয়টি আড়াল করতে পরদিন বগুড়া সদর থানায় গিয়ে স্ত্রী নিখোঁজের একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
এ ঘটনার পর বগুড়া পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে মুকুলের বক্তব্যে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে নিজ বাড়ির সেপটিক ট্যাংক ভেঙে মারুফার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার বলেন, টিকটকে নাচের ভিডিও প্রকাশ নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে মুকুল স্ত্রীকে হত্যা করেন। পরে পরিকল্পিতভাবে মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে গুম করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। উদ্ধারকৃত মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করে মুকুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, মারুফা স্বামীর নিষেধ অমান্য করে টিকটকে ভিডিও করতেন, যা নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এবারের ঘটনায় চরম পরিণতি হয়েছে। পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।
সবার দেশ/কেএম




























