কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, নামহীন কালচার শুরু

চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলের বহু প্রতীক্ষিত কালুরঘাট রেল-সড়ক সেতুর নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের ঘোষণা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে এবার উদ্বোধনী ফলকে নেই কোনও ব্যক্তির নাম। শুধু প্রকল্পের শিরোনাম ও বাস্তবায়নকারী সংস্থার নাম দিয়ে ফলক স্থাপন করায় সৃষ্টি হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী দৃষ্টান্ত—নামবিহীন সংস্কৃতির সূচনা বলেই মনে করছেন অনেকে।
বুধবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ফলক উন্মোচন করেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে ফলকে তার নাম না থাকার বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি ছিল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট নির্দেশনা। বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সুবক্তগীন বলেন, ফলকে কারও নাম না রাখার নির্দেশনা পেয়েছিলাম। এটা প্রকল্পভিত্তিক বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত। এতে ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রচারের পরিবর্তে প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতাই গুরুত্ব পেয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, বর্তমানে ব্যবহৃত কালুরঘাট সেতুটি ১৯৩১ সালে নির্মিত হয়, যার আয়ুষ্কাল অনেক আগেই শেষ। ২০১১ সালেই সেতুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। নতুন এ সেতু ২০২৯ সালের মধ্যে নির্মাণ শেষ করে ২০৩০ সালে চালু করার লক্ষ্যে কাজ চলছে, বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, এ কালুরঘাট সেতু নিয়ে আমার ব্যক্তিগত স্মৃতিও রয়েছে। এটি শুধু দক্ষিণ চট্টগ্রামের নয়, পুরো অঞ্চলের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। আজকের দিনটি তাই ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে।
চট্টগ্রাম সফরে এটিই প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রথম আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি।
এর আগেও তার কার্যালয়ের নির্দেশে বেশ কিছু প্রকল্প উদ্বোধনে ব্যক্তির নাম ছাড়া ফলক স্থাপনের নজির তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি সন্দ্বীপে ফেরি সার্ভিস উদ্বোধনের ক্ষেত্রেও একই রীতি অনুসরণ করা হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিকদের নাম ও ছবি সম্বলিত ফলকের জায়গায় কেবল প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করলে তা একদিকে যেমন অহমিকা এড়ায়, তেমনি সরকারি কাজের মধ্যে নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখে।
এ সংস্কৃতি টেকসই হলে দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠান ও জনস্বার্থকে গুরুত্ব দেবে—এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।
সবার দেশ/কেএম