দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ
বিচারক রেজাউল করিম বরখাস্ত
জব্দ গাড়ি নিজের ব্যবহারে, প্লট বাণিজ্য ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগে তদন্তে আইন মন্ত্রণালয়।
দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে জেলা জজ মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। সোমবার (১৩ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে—
বাংলাদেশ সুপ্রিম জুডিশিয়াল সার্ভিসের শৃঙ্খলা বিধিমালা, ২০১৭–এর বিধি ১১ অনুযায়ী, অসদাচরণের অভিযোগে রেজাউল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা যুক্তিযুক্ত বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
বর্তমানে রেজাউল করিম আইন মন্ত্রণালয়ে ‘সংযুক্ত’ অবস্থায় ছিলেন।
অভিযোগের পটভূমি
বিচারক রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের সূচনা হয় গতবছর ২৫ সেপ্টেম্বর। একটি বেসরকারি টেলিভিশনে ‘গাড়িকা—’ নামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচারিত হয়, যেখানে বলা হয়—
- তিনি এক আসামির আলামত হিসেবে জব্দ করা গাড়িটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হেফাজত থেকে নিজের ব্যক্তিগত ব্যবহারে নিয়েছিলেন।
- আইন মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে পূর্বাচলে সাড়ে ৭ কাঠা প্লট নেন—যেখানে সাধারণত হাইকোর্ট বিচারপতিরা পান মাত্র ৫ কাঠা।
- মামলায় সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে নর্দান ইউনিভার্সিটির পাশে পাঁচ কাঠা রেডিমেড প্লট গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে।
- ঢাকার সিএমএম আদালতে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় নিজ জেলা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করেন।
চলছে আনুষ্ঠানিক তদন্ত
আইন মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন,
তদন্তের কাজ চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে স্থায়ী বরখাস্ত ছাড়াও ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একজন বিচারকের পতন
রেজাউল করিম চৌধুরী একসময় ছিলেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বিচারক—বিচার বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে। সে অবস্থান থেকেই অভিযোগের বীজ বোনা হয়। বিচার বিভাগের অভ্যন্তরে এ বরখাস্তের ঘটনায় তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত যখন বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন মহল।
এ বরখাস্তের মাধ্যমে সরকার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে— বিচারক বলেই কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
সবার দেশ/কেএম




























