Sobar Desh | সবার দেশ এম এম এ শাহজাহান


প্রকাশিত: ১৩:০৯, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৭:০৪, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

স্বজনপ্রীতি, দুর্ণীতির নিয়োগ বন্ধ হোক 

স্বজনপ্রীতি, দুর্ণীতির নিয়োগ বন্ধ হোক 
ছবি: সবার দেশ

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে একই গ্রামের ৩৭ জনের স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে চাকরি হয়েছে। খবরে প্রকাশ ওই বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ কাজ করেছেন। 

৫ আগস্টের পর দেশের পরিস্থিতি দ্রুত বদল হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন অফিসে লোকদের দুর্নীতির চিত্র জনসমক্ষে আসছে, যা আগে অতটা এমন ফলাও করে প্রকাশ পেতো না। সাহস হতো না প্রকাশ করার। আগে এমন কাজ যতগুলো হতো তার খুব কমই আমরা জানতে পেতাম। তবে ইদানিং এগুলো প্রকাশ পচ্ছে। এখন অনেক খবরই আমাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। সুন্দর সমাজ ঘটনে দেশের জন্য এটি একটি শুভ লক্ষণ।

কথা হচ্ছে এরকম স্বজনপ্রীতি কি শুধু এখনই হচ্ছে, নাকি আগেও চালু ছিল। আসলে এক দিনে তো এরকম হয় না। এক রাতে তো আর রোম নগরী তৈরি হয়নি। এটা ধীরে ধীরে হয়েছে, এখন এসে বিরাট রুপ ধারণ  করেছে। আগে দুর্নীতি হতো ব্যক্তি পর্যায়ে। বিগত ১৬ বছরে হয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়।

কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে (যদিও তা বিজ্ঞাপন দিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়), সারা বাংলাদেশ থেকেই মানুষ অংশগ্রহণ করে চাকরি পাওয়ার জন্য। একই সঙ্গে সে প্রতিষ্ঠানের ভেতর থেকে সংশ্লিষ্ট কিছু লোভী কর্মকর্তাদের অনেকে ভেতরে ভেতরে চাকরিপ্রার্থী লোকদের পেছনে দালাল লাগিয়ে দেন, উদ্দেশ্য অবৈধ পথে উপার্জন করতে। তাছাড়াও মোটামুটি ক্রাইটেরিয়া ফিলাপ হয় অর্থাৎ প্রাথমিক যোগ্যতা থাকলে, নিজেদের আপনজনকে ফিলাপ করে দরখাস্ত করতে বলেন এবং তারা যথাযথ নিয়মে দরখাস্তও করেন। 

তারপর লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষা থাকলে মৌখিক দেবার পর দেখা যায় যে, যোগ্যতার ভিত্তিতে অনেকই চাকরি পান না। কারণ  স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে কিছু লোভী কর্মকর্তা নিজেদের লোককে পরীক্ষায় নির্বাচিত করে নিয়োগ দিয়ে দেন।

স্বজন প্রীতি ছাড়াও কিছু লোক ঘুষের বিনিময়ে চাকরি দিয়ে থাকেন, যা জনতার চোখে ধুলি দিয়ে লোক দেখানো পরীক্ষা এবং ভাইবার মাধ্যমেই তারা করে থাকেন। লিখিত এবং ভাইভা পরীক্ষা নিলে কি হবে, তাদের মনের ভেতরেই প্রকৃত বাসনা লুকিয়ে থাকে। পরীক্ষা, ভাইবা যা-ই নিক না কেনো, যাদেরকে তারা চাকরি দিবেন তা তো আগে থেকেই তারা জানেন। জনতাকে শুধু আই ওয়াশ করেন লোক দেখানো পরীক্ষার নেয়ার  মাধ্যমে। 

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে তাই হয়েছে। ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন যথাযথভাবে তদন্ত করার পর এগুলো তাদের চোখে পড়েছে। তা  আবার সংবাদপত্র এবং বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। 

আরও পড়ুন<<>> উপদেষ্টা মহোদয়ের উপলব্ধি, ন্যায়পরায়ণ সচিব এবং সুন্দর বাংলাদেশ

এ তো বাংলাদেশের নিত্য দিনের ঘটনার একটি খন্ডচিত্র মাত্র। এরকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রূপে একই রকম কাজ হচ্ছে এবং যোগ্যতর ব্যক্তিকে পাশ কাটিয়ে অযোগ্যদের চাকরি হচ্ছে। যা সমাজে সুস্থ নীতি বিকাশের অন্তরায়। 

এহেন ব্যবস্থা অবশ্যই পরিবর্তন হওয়া দরকার। যারা এ সমস্ত কাজে সংশ্লিষ্ট আছেন, তাদেরও দেশের প্রতি একটা দায়বোধ থাকা বাঞ্ছনীয়। এটা ভাবা প্রয়োজন এবং এগুলো ভবিষ্যতে যেনো আর কারও দ্বারা সাধিত না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে দেশকে সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা গঠনে সহায়তা করতে পারে।
আসুন নিজেরা সচেতন হই এবং অপরকে সচেতন করি। দেশকে ভালোবাসি, যোগ্যতর কাউকেই যোগ্যতম স্থানে স্থান দিই। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এগুলো থেকে নিজে মুক্ত থাকি এবং অপরকে মুক্ত থাকতে সহায়তা করি। নৈতিক চরিত্রের উন্নতি সাধন করে সুনাগরিক হিসেবে দেশকে সেবা দিয়ে যাই। তবেই হবে আমাদের সুন্দর স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ।

লেখক: 
এম এম এ শাহজাহান, প্রকৌশলী 
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।

সম্পর্কিত বিষয়:

শীর্ষ সংবাদ:

পাঁচ অস্ত্রসহ গ্রেফতার লিটন গাজী সম্পর্কে সব জানালো পুলিশ সুপার
আনসার ভিডিপি ব্যাংকের ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ব্যবস্থাপক গ্রেফতার
লালমনিরহাটে স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন
ভোলাহাটে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু
সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দালাল চক্রের খপ্পরে
বাংলাদেশ সীমান্তে পঁচছে ৩০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ
সুদের টাকার জন্য নোয়াখালীতে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেফতার-১
ইমরান খান বেঁচে আছেন, দেশ ছাড়তে চাপ: পিটিআই
হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের প্লট দুর্নীতি মামলার রায় আজ
শুরু হলো বিজয়ের মাস
বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত
খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে হাসপাতালে জামায়াত সেক্রেটারি
স্কুল ভর্তির লটারি ১১ ডিসেম্বর
বিডিআরকে দুর্বল করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখাতেই পিলখানা হত্যাকাণ্ড
ছয় উপসচিবের দফতর পরিবর্তন