ফ্যাসিবাদকে না বলুন, জনতার বন্ধু হোন

চরম ঘৃণ্য খারাপ কাজ করলে তো সে ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের বিরুদ্ধে অন্যেরা নিষিদ্ধ ঘোষণা চাইতেই পারে। আপনারা খারাপ কাজ করা ছেড়ে দেন, চাঁদাবাজি ছেড়ে দেন, জনগণের সত্যিকারের কল্যাণ করুন, ক্ষমতায় গিয়ে নিজেরা নিজেদেরকে বড়লোক বানানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত না হোন, তাহলে অবশ্যই জনতা আপনাদেরকে চাইবে, হ্যাঁ বারবারই চাইবে।
বিগত ৫৪ বছর ধরে যারা রাজাকার উপাধি মাথায় নিয়ে এদেশে চলাফেরা করছিলো, তাদের দ্বারা তেমন কোন খারাপ কাজ ঘটন হতে আমরা দেখিনি। বরং যারা স্বাধীনতা অর্জনে নিজেদেরকে একমাত্র দল হিসেবে মনে করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বাংলাদেশকে শাসন করছিলো তাদেরই কৃতকর্মের ফল হল ৩৬ শে জুলাই বা ৫ আগস্ট ২৪ । এখন তাদের নেতৃত্ব স্থানীয় প্রায় সকলেই সদলবলে পলাতক প্রতিবেশী রাষ্ট্রে। পরিশেষে মন্তব্য করা যায় ‘বৃক্ষ তোর নাম কি ফলে পরিচয়’।
কিন্তু তারা পালিয়ে গিয়েও ক্ষান্ত হয়নি তাদের কর্মী বাহিনী ফেসবুকে প্রচন্ড রকমের সরব আছে তা facebook খুললেই বুঝতে পারবে যে কোন কেউ। তারা প্রতিনিয়ত তাদের দলের সাফাই গাচ্ছে, তারা তাদের দ্বারা কৃত অপরাধের কোনরকম অনুশোচনা না করে বরঞ্চ তারা সর্বদা প্রায় সকলেই হুমকি-ধামকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি তাদের দলের বেশ কয়েকবারের রাষ্ট্রপতি, যিনি সংসদের স্পিকারও ছিলেন, সে লোক অসুস্থতার কথা বলে দেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাঁকি রাতের আঁধারে পালিয়েছেন ভিন দেশে। এ নিয়ে প্রচন্ড অভিমানে ২৪ এর ছাত্র জনতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টাদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে, রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে উত্তেজিত হয়ে এ দলটিকে নিষিদ্ধ করার জন্য, অবিলম্বে তাদের বিচার করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু ইস্যুতে পুনরায় শাহবাগে আন্দোলন শুরু করেছে।
আরও পড়ুন <<>> ক্ষমতাবান নয়, দায়িত্ববান হয়ে দেশসেবা করুন
স্বৈরাচার পতনে ছাত্র জনতার সাথে বাংলাদেশে রাজনীতি চর্চা করে এমন প্রায় প্রত্যেকটি দলই দীর্ঘদিন গুম, খুন, অপ শাসন চালিয়ে যাওয়া পলাতক দলটিকে নিষিদ্ধকরণ এবং বর্তমানে তাদের যে সমস্ত কর্মী গোপনে দলের অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে সে ব্যাপারে সরকার কর্তৃক দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করার জন্য শাহবাগে চলমান আন্দোলনে শরিক হয়েছে ।
যদিও এ মুহূর্তে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দল শাহবাগের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু তারা দূরে থেকে স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী দলটিকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে আলাদাভাবে নিজেদের কৌশলী বক্তব্য প্রদান করেছে। সময় বলে দিবে তাদের এ কৌশল প্রয়োগ করার অর্থ কি। কিন্তু মোটামুটি বোঝা যাচ্ছে যে, ফ্যাসিবাদী দলটিকে নিষিদ্ধকরনের জন্য বাংলাদেশের সবাই ঐক্যবদ্ধ আছে। অবশেষে জয় হয়েছে জনতার চাওয়ার। নিষিদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগ।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি কিসের আলামত? বোঝা যায় যে, স্বৈরাচারী কায়দায় ফ্যাসিবাদ কায়েম করে কোন দলই বাংলাদেশকে শাসন করতে পারেনি। যদিও পেরেছে সেটা কিছু সময়ের জন্য। তাই বর্তমানে রাজনৈতিক চর্চা করছেন যারা তাদের সকলের জন্য একটি অগ্রিম বার্তা হলো- আপনারা জনতাকে ভালোবাসুন, দলের খারাপ লোকদেরকে সরিয়ে দিয়ে ভালো নীতিবান মানুষের রাজনীতি করার সুযোগ তৈরি করে দিন, জনগণের সত্যিকারে কল্যাণ চিন্তা করুন, তাহলে দেশের আপামর সাধারণ মানুষ আপনাদেরকেই চাইবে। যদি তা না হয় তাহলে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসলে আবারও জনতা আপনাদেরকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করবে। কেননা এদেশের পোড় খাওয়া খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ কখনো ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করেনি, করবেও না কোনদিন।
লেখক:
এম এম এ শাহজাহান, প্রকৌশলী
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।