Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:০৬, ১৩ মে ২০২৫

আপডেট: ১০:২৭, ১৩ মে ২০২৫

বিদেশে চিকিৎসা নাকি ‘নিরাপদ প্রস্থান’? উঠছে নানা প্রশ্ন

আবদুল হামিদ থাইল্যান্ডে কেনো গেলেন ?

আবদুল হামিদ থাইল্যান্ডে কেনো গেলেন ?
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বর্তমানে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে চিকিৎসাধীন। প্রখ্যাত ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ড. হারিত সুয়ানরাসমির তত্ত্বাবধানে বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে তার ক্যানসার সংক্রান্ত চিকিৎসা চলছে। আজ ১৩ মে তার বায়োপসি (ক্যানসার শনাক্তকরণ পরীক্ষা) হওয়ার কথা রয়েছে।

চিকিৎসা, কিন্তু এখনো ভর্তি নন

সূত্র জানায়, হামিদ এখনো হাসপাতালটিতে ভর্তি হননি। বাইরে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন, তবে রিপোর্ট অনুযায়ী অবস্থা গুরুতর হলে আজ বা আগামীকাল ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে তার পেট স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আছেন তার ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার এবং শ্যালক ডা. নওশাদ খান।
ডা. নওশাদ জানান, ঢাকায় দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসার চিকিৎসা চলছিল হামিদের। ডান ফুসফুসে একটি টিউমার রয়েছে, যেখান থেকে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তার কিডনির অবস্থাও ভালো নয়।

দেশ ছাড়ার পটভূমি: চিকিৎসা না পালিয়ে যাওয়া?

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের নয় মাস পর, ৮ মে ভোররাতে লাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

কিন্তু এখানেই উঠেছে প্রশ্ন: কিশোরগঞ্জে তার নামে থাকা হত্যা মামলার পরও তিনি কীভাবে দেশ ছাড়লেন? বিশেষত, জুলাই হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা চলমান।

এ ঘটনার পর সরকারের ভেতরে নড়াচড়া শুরু হয়। সরকার গঠন করে তিন সদস্যের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি, যার প্রধান শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। এর বাইরে পুলিশ সদর দফতর থেকেও অতিরিক্ত আইজিপির নেতৃত্বে পৃথক কমিটি গঠিত হয়েছে।

শাস্তিমূলক ব্যবস্থা শুরু

এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার, ইমিগ্রেশন পুলিশের এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এবং এসবির এক কর্মকর্তাকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে।

পরিবারের অবস্থান

সাবেক এমপি ও হামিদের বড় ছেলে রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক ২০২৪ সালের ৫ আগস্টেই দেশ ছাড়েন। এরপর ছোট ছেলে তুষার বাবার সঙ্গে ব্যাংককে চলে যান। তবে হামিদের স্ত্রী রাশিদা খানম এখনও দেশে এবং গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নিয়মিত ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন।

শ্যালকের বক্তব্য: আমরা শুধু চিকিৎসা নিয়েই চিন্তিত

হামিদের শ্যালক বলেন, তার শরীর খুব দুর্বল হয়ে গেছে, ওজনও অনেক কমেছে। আপাতত আমরা চিকিৎসা নিয়েই চিন্তিত।

দেশে কবে ফিরবেন? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, চিকিৎসা শুরু হলে তার পরেই কিছু বলা সম্ভব হবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতির থাইল্যান্ড যাত্রা নিছক চিকিৎসা নাকি নিরাপদ ‘পলায়ন’, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক জল্পনা। আর এ ঘটনার পেছনে প্রশাসনের উদাসীনতা, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং নিরাপত্তা প্রটোকলের ব্যবহার কতটা দায়ী, তা খতিয়ে দেখছে তদন্ত কমিটি।

সবার দেশ/কেএম