‘হ্যাঁ’ ভোটে জন্ম নেয়া বিএনপির মৃত্যু হবে ‘না’ ভোটে

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘রাজনীতির বর্তমান ও ভবিষ্যতের পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে অনাকাঙ্ক্ষিত কুতর্ক বন্ধ করে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানান। 

তিনি বলেন,

বিএনপি কাবিননামায় সই করেছে; তাই অনলাইন-প্রচারের ‘না’ শুনে তাদের পথ নতুন করে পাল্টানো সম্ভব নয়—এক্ষেত্রে ‘না’ ভোট তাদের জন্য আত্মঘাতী হবে।

পাটওয়ারী বলেন, গণভোট আগে হবে নাকি পরে—এ আলোচনা বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সীমাবদ্ধ কুতর্কে পরিণত হয়েছে। এ ধরণের অস্পষ্টতার ভেতর দিয়ে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে ঠেলে দেয়া সম্ভব নয়, তিনি বলেন। তিনি বিএনপিকে অনুরোধ করে বলেন,

দলের জন্ম হয়েছিলো ‘হ্যাঁ’ ভোটের মধ্য দিয়ে; তাই যদি তারা ‘না’-তে অনড় থাকে তাহলে তা তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে—‘না’ ভোটে বিএনপির মৃত্যু উচ্চারণ করা যেতে পারে। তিনি বলেন, বড় একটি দল হিসেবে বিএনপি নিজেদের কবর লিখে বসবেন না।

জামায়াতকে তিনি সতর্ক করে বলেন, পার্টির উপরের সদস্যরা (আপার হাউজ) যে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিয়ে লোভ বা কৌশল চালাচ্ছে, তা লোয়ার হাউজে আনা হলে পুরো বিষয়টি নস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে। তবে গণভোট নিয়ে জামায়াত ভবিষ্যতে বিএনপির সঙ্গে একত্রে ভূমিকা নিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

সংস্কার কমিশনের সুপারিশপত্রের খসড়া জনসম্মুখে আনার দাবি জানিয়ে পাটওয়ারী বলেন, সুপারিশমালা প্রকাশ করা না হলে এতে অসৎ উদ্দেশ্য লুকানো থাকতে পারে। তিনি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের উপস্থাপিত ড্রাফট নিয়ে সন্দেহভাজন মন্তব্য করেন এবং বলেন, বাংলাদেশের মাঠ পিছলা — সেখানে আরও বেশি তেল মর্দন করা হচ্ছে; তাই ড্রাফট প্রকাশ করতে হবে, তখনই এনসিপি স্বাক্ষর করবে বলে জানান।

দেশের নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে তিনি বলেন, পরিস্থিতি অনুকূলে না হলে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। যদি তা না করা হয় এবং দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়, তার দায় হবে প্রধান উপদেষ্টার উপর—তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। পাটওয়ারী আরও বলেন, নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টি অবৈধভাবে বাধা সৃষ্টি করে, তাদের সঙ্গে কোনও ছাড় থাকবে না; তবে বিএনপিকে অনুরোধ জানানো হবে যে তারা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে আনবে না।

সভায় তিনি শহীদ পরিবার ও আহতদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি বড় ঘোষণা অনুষ্ঠানের আহ্বানও করেন—ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তার উপদেষ্টাদের নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে বাস্তবায়নের রূপরেখা ঘোষণা করতে হবে, তখন এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে বলেও জানান তিনি।

রাজনৈতিক মহলে এখন প্রশ্ন—আগে নির্বাচন নাকি আগে গণভোট। বিএনপির অনলাইন-প্রচারের ‘না’ ও এনসিপির সতর্ক বার্তায় জোটভিত্তিক বিভাজন আরও গভীর হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে।

সবার দেশ/কেএম