চার দিন ধরে রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ, আজ ঢাকায় বৈঠক
রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর থেকে টানা চার দিন ধরে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীরা পড়েছেন মারাত্মক ভোগান্তিতে।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় বাস মালিক সমিতি। এরপর থেকে এ তিন জেলার কোনো দূরপাল্লার বাস সড়কে নামেনি।
আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকার গাবতলীতে মালিক-শ্রমিকদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পরিবহন নেতারা জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান আসতে পারে।
এদিকে টানা চার দিনের অচলাবস্থায় যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। যাত্রীদের অভিযোগ, মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্বের কারণে তাদেরকেই খেসারত দিতে হচ্ছে। কেউ বাধ্য হয়ে ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন যানবাহনে যাতায়াত করছেন, আবার অনেকে বাড়তি ভাড়া দিয়ে প্রাইভেট কার কিংবা স্থানীয় বাসে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
রাজশাহীর শিরোইল এলাকায় সোমবার সকালেও ঢাকাগামী যাত্রীদের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। পবার দামকুড়া এলাকার আবদুর রহিম সকাল পৌনে ১০টার দিকে স্ট্যান্ডে এসে বাস না পেয়ে স্থানীয় একটি বাসে ৬০০ টাকা ভাড়া দিয়ে টিকিট কাটেন। তিনি বলেন, আগেই শুনেছিলাম বাস চলছে না। তবুও ঢাকায় জরুরি কাজে যেতে হয়েছে। সাধারণত ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, এখন দিতে হচ্ছে ৬০০ টাকা।
আরেক যাত্রী আবদুল হালিম পড়েছেন আরও বিড়ম্বনায়। তিনি অনলাইনে টিকিট কিনলেও স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখেন বাস কাউন্টার বন্ধ, বাসও নেই। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনলাইনে টিকিট পাওয়া গেলে ধরে নেব চালু আছে। এসে দেখি সব বন্ধ। আমাকে কেন হয়রানি করা হবে? আমি আইনি ব্যবস্থা নেবো।
বাসমালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসেই একাধিকবার মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্বে বাস চলাচল বন্ধ হয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকেরা আন্দোলনে যান। দুই দিন পর মালিকদের আশ্বাসে বাস চলাচল শুরু হলেও প্রত্যাশিত হারে বেতন না বাড়ায় আবার ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়। পরে আংশিক সমঝোতায় পরিবহন চালু হলেও তা কার্যকর না হওয়ায় নতুন করে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ফের বাস বন্ধের ঘোষণা আসে।
উত্তরবঙ্গ বাস মালিক সমিতির মহাসচিব নজরুল ইসলাম জানান, ঢাকায় পরিবহন নেতাদের সঙ্গে গতকাল মালিকদের বৈঠক হয়েছে। আজ আবারও সভা হবে, যেখানে রাজশাহী অঞ্চলের মালিকেরাও উপস্থিত থাকবেন। আলোচনার পর বাস চলাচল শুরু হবে কি না তা বোঝা যাবে।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার বৈঠকে বেতন বাড়ানোর চুক্তি হয়েছিলো। কিন্তু সে চুক্তি বাস্তবায়ন না করেই মালিকেরা গত বৃহস্পতিবার থেকে বাস বন্ধ করে দেন। ফলে বর্তমান ভোগান্তি মালিকদের কারণে হচ্ছে, শ্রমিকদের নয়। আজকের আলোচনায় আমরা রাজি আছি, তবে তা অবশ্যই শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করে হতে হবে।
সবার দেশ/কেএম




























