প্রার্থী মনোনয়নকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত ১০
সিলেট বিএনপির লুনা গ্রুপ ও হুমায়ূন গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র
সিলেটের বিশ্বনাথে বিএনপির দুই প্রভাবশালী বলয়ের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে পৌর সদরের বাসিয়া ব্রিজ এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
সংঘর্ষটি ঘটে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদীর লুনা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরের সমর্থকদের মধ্যে। মূলত সিলেট-২ আসনের দলীয় মনোনয়ন ও এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ সংঘাতের সূত্রপাত।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দৌলতপুর ইউনিয়নে হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একটি নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশকে ঘিরে আগের দিন থেকেই ইলিয়াসপন্থী নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছিলো। রাতে সমাবেশ শেষে উভয় পক্ষের সমর্থকরা পৌর সদরে ফেরার পথে বাসিয়া ব্রিজ এলাকায় মুখোমুখি হয়। প্রথমে কথা-কাটাকাটি, এরপর শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ।
রাত ৯টার পর থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এলাকায় তীব্র সংঘর্ষ চলে। দোকানপাট দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়, রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাত ১১টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সিলেট-২ আসনের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরেই চলছিলো। এম ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা এলাকাটিতে দলীয় নেতৃত্ব ধরে রাখেন। কিন্তু সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘোষণা—এ আসনে প্রার্থী হবেন হুমায়ুন কবির—পুরো পরিস্থিতিকে নতুন করে উত্তপ্ত করে তোলে।
দলীয় অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, এ ঘোষণার পর ইলিয়াসপন্থী নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষ সে ক্ষোভেরই বিস্ফোরণ।
সিলেট রাজনৈতিকভাবে সবসময় বিএনপির অন্যতম শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু সাম্প্রতিক এ সহিংসতা ইঙ্গিত দিচ্ছে—দলটি এখন অভ্যন্তরীণ বিভাজনের গভীর সংকটে রয়েছে, যা আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
সবার দেশ/কেএম




























