প্লট দুর্নীতির মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার প্রমাণিত, ১৭ জন দণ্ডিত
হাসিনার ৫, রেহানার ৭ ও টিউলিপের ২ বছরের কারাদণ্ড
রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দায়ের করা বহুল আলোচিত দুর্নীতির মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর ১১টা ৩০ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে প্রমাণিত হয়—ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ব্যক্তিগত স্বার্থে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। ফলে আদালত শেখ হাসিনাকে ৫ বছর, শেখ রেহানাকে ৭ বছর এবং টিউলিপকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। মামলায় আরও মোট ১৭ জন অভিযুক্ত থাকায় বাকিরাও বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হন।
আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তা
রায়কে কেন্দ্র করে ভোর থেকেই আদালত এলাকায় নজিরবিহীন নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালতের প্রধান ফটক ও ভেতরের বারান্দায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকে। প্রবেশপথে তল্লাশি ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদও চলতে দেখা যায়।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা জানান—নিয়মিত নিরাপত্তার পাশাপাশি আজ অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থান নেয়া হয়েছে।
কী ছিলো অভিযোগ
দুদকের দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় প্রভাব ও প্রশাসনিক দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেয়া হয়। এ অভিযোগে ১৩ জানুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন।
মামলায় প্রথমে ১৫ জনকে আসামি করা হলেও তদন্তের পর আরও দুইজন যুক্ত হয়ে মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন—গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউকের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সচিব, পরিচালক, সদস্য এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিবও।
বিচার প্রক্রিয়া ও সাক্ষ্য
গত ৩১ জুলাই আদালত তিনটি মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে এ মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। যাচাই–বাছাই শেষে আদালত নিশ্চিত হয়—ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ সত্য।
রায়ের প্রতিক্রিয়া
রায়ের আগে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মঈনুল হাসান বলেছিলেন—সব সাক্ষ্য-প্রমাণ আমরা আদালতে হাজির করতে পেরেছি। এখন সিদ্ধান্ত আদালতের, আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।
তার বক্তব্য আংশিকভাবে সত্যিই প্রতিফলিত হয়েছে—রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাকেন্দ্র থেকে প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তর পর্যন্ত দুর্নীতির দায় এবার আদালতে প্রতিষ্ঠিত হলো।
সবার দেশ/কেএম




























