ভারতের আত্মসমর্পনে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা
ট্রোল হামলার কবলে বিক্রম মিশ্রি

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর থেকেই প্রবল অনলাইন ট্রোলিং ও কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। শুধু তাকেই নয়, তার পরিবারের সদস্যদেরও আক্রমণ করছে একাংশ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী।
১০ মে ভারতের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পর এ আক্রমণের মাত্রা বাড়ে। বিক্রম মিশ্রি এক পর্যায়ে বাধ্য হন তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট ব্যক্তিগত করে দিতে।
পেশাদার কূটনীতিক, রাজনৈতিক ট্রোলের টার্গেট
যুদ্ধবিরতির মূল কূটনৈতিক সমন্বয়ক ছিলেন বিক্রম মিশ্রি। তিনি ৭ মে শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিন্দুর’–এর পর পাকিস্তান ও আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে যোগাযোগে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু শান্তিপূর্ণ সমাধানের এ প্রচেষ্টাকেই কিছু চরমপন্থী গোষ্ঠী দুর্বলতা হিসেবে তুলে ধরতে চায়।
আইএএস অ্যাসোসিয়েশন ও আমলাদের প্রতিবাদ
এ পরিস্থিতিতে বিক্রম মিশ্রির পক্ষে দাঁড়িয়েছে আইএএস অ্যাসোসিয়েশন ও ভারতের শীর্ষ আমলারা। আইএএস অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে জানায়, একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যেভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ চালানো হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা তার ও তার পরিবারের পাশে রয়েছি।
প্রধান প্রশাসনিক সংস্কার সচিব ভি শ্রীনিবাস বলেন, বিক্রম মিশ্রি ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কূটনীতিক। তার পেশাদারিত্ব জাতির জন্য গর্বের।
অবসরপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব নিরুপমা মেনন রাও মন্তব্য করেন, মিশ্রির মেয়ে পর্যন্ত কটাক্ষের শিকার হয়েছেন। এ ধরনের আচরণ শালীনতার সীমা অতিক্রম করে। ঘৃণার এ সংস্কৃতি বন্ধ করা জরুরি।
অন্যদিকে সাবেক রাষ্ট্রদূত নবদীপ সুরি বলেন, বিক্রম মিশ্রি সবসময় স্থিরতা ও কৌশলের প্রতীক। তাকে এভাবে নিশানা করা অনৈতিক ও হতাশাজনক।
২২ এপ্রিল পহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর শুরু হয় ভারতীয় সামরিক অভিযান। এরপরই মিশ্রি পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যাকচ্যানেল আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির পথে অগ্রসর হন। কিন্তু এ উদ্যোগকেই ‘দুর্বলতা’ বলেও অভিযুক্ত করছে কিছু উগ্র গোষ্ঠী।
বিশ্লেষকদের মতে, কূটনীতিকদের পেশাগত সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানো নিন্দনীয় প্রবণতা, যা প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও গঠনমূলক আলোচনার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
সবার দেশ/কেএম