সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদন
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া ভারতের মানবিক ঐতিহ্যের অংশ
ভারতের সংসদে পেশ করা এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হয়েছে। দেশটির দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের প্রতিফলন হিসেবেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) কংগ্রেস সংসদ সদস্য শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন ভারতের সংসদীয় কমিটি এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট সংসদের উভয় কক্ষে পেশ করে।
মানবিক ঐতিহ্য ও ভারতীয় মূল্যবোধ
প্রতিবেদনে সংসদীয় কমিটি উল্লেখ করেছে যে, ভারত ঐতিহাসিকভাবেই বিপদে পড়া বা অস্তিত্বের সংকটে থাকা ব্যক্তিদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও ভারত সে একই নীতি অনুসরণ করেছে। তাকে আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্তটি কোনও বিশেষ রাজনৈতিক সমীকরণ নয়, বরং ভারতের চিরাচরিত মানবিক দর্শনের অংশ। রিপোর্টে আরও বলা হয়, গুরুতর দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের আশ্রয় প্রদান ভারতের কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও পরম্পরার বহিঃপ্রকাশ।
ভারতের ভূমি ব্যবহার করে রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রসঙ্গে
শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করে বিভিন্ন মাধ্যমে বিবৃতি দিচ্ছেন—এমন গুঞ্জনের বিষয়েও প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বক্তব্য দিচ্ছেন। তবে ভারত সরকার তাকে দেশটির ভূখণ্ড ব্যবহার করে কোনও ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম বা প্রচারণা চালানোর জন্য কোনও আনুষ্ঠানিক প্ল্যাটফর্ম বা জায়গা প্রদান করেনি। বিক্রম মিশ্রি স্পষ্ট করেন যে, ভারত তার ভূমি থেকে অন্য কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব ফেলার সুযোগ কাউকে দেয় না।
বাংলাদেশের দাবি ও বর্তমান পরিস্থিতি
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খুনি হাসিনা। বর্তমানে তার দল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বাংলাদেশে কার্যত নিষিদ্ধ পর্যায়ে রয়েছে। এদিকে, শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ভারতের কাছে ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ভারতের সংসদীয় কমিটির এ রিপোর্টটি এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে ভারত তার অবস্থান পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সবার দেশ/কেএম




























