উদ্বেগ বাড়ছে দেশজুড়ে
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে এভারকেয়ারে প্রধান উপদেষ্টা
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বাড়ছে উদ্বেগ। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার পর এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের সঙ্গে দীর্ঘসময় কথা বলেন এবং খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান।
এর আগের দিন মঙ্গলবার রাতে দেশটির তিন বাহিনীর প্রধান—সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান—এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা প্রত্যেকেই খালেদা জিয়ার হালনাগাদ শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই রাতে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানও হাসপাতালে ছুটে গিয়ে খোঁজখবর নেন।
খালেদা জিয়া ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর থেকে প্রতি ছয় মাস অন্তর দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ালেও চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে বিদেশে যেতে দেয়া হয়নি।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, ফুসফুসের সমস্যা এবং নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। গত বছরের ৫ আগস্ট দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া গণ–অভ্যুত্থানের পর তিনি মুক্তি পান। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে ১১৭ দিন অবস্থান শেষে ৬ মে দেশে ফেরেন।
বছরের শুরু থেকেই নিয়মিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে একাধিকবার হাসপাতালে নেয়া হলেও ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারও এভারকেয়ারে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকেই চিকিৎসকরা তাকে ‘সংকটাপন্ন’ হিসেবে বর্ণনা করছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ হোসেন জানান, জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় খালেদা জিয়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এদিকে একের পর এক শীর্ষ রাষ্ট্রীয় ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাদের হাসপাতাল পরিদর্শন—খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রার আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দলের নেতারা আশঙ্কা করছে, পরিস্থিতি যে কোনও সময় আরও জটিল মোড় নিতে পারে।
সবার দেশ/কেএম




























