পাকিস্তানে সেনা ক্যাম্পে আত্মঘাতী হামলা, নিহত ৯
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় একটি সেনা ক্যাম্পে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। বয়া এলাকায় অবস্থিত নিরাপত্তা বাহিনীর ওই ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের এ হামলায় চারজন সেনাসদস্য এবং পাঁচজন হামলাকারী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, শুক্রবার একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। তবে গেটেই তাদের কড়া প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়। ভেতরে ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে সন্ত্রাসীরা বিস্ফোরকবোঝাই একটি গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পের বাইরের দেয়ালে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে দেয়ালের বড় একটি অংশ ধসে পড়ে এবং প্রচণ্ড বিস্ফোরণে আশপাশের বেসামরিক ঘরবাড়ি ও একটি মসজিদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ আত্মঘাতী বিস্ফোরণ এবং পরবর্তী গুলিবিনিময়ে চারজন পাকিস্তানি সেনা শাহাদাত বরণ করেন। নিহত সেনাসদস্যরা হলেন হাবিলদার মোহাম্মদ ওয়াকাস, নায়েক খানওয়াইজ, সিপাহি সুফিয়ান হায়দার এবং সিপাহি রিফাত। বিস্ফোরণে অন্তত ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী এ হামলার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপিকে দায়ী করেছে, যাদেরকে পাকিস্তান সরকার ‘ফিতনা আল খারেজি’ হিসেবে অভিহিত করে থাকে। আইএসপিআর-এর দাবি, এ হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনা করা হয়েছে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে যে, আফগান তালেবান সরকার তাদের ভূখণ্ডে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ইসলামাবাদ আশা প্রকাশ করেছে যে, কাবুল সরকার তাদের প্রতিবেশী সুলভ দায়িত্ব পালন করবে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে তাদের মাটি ব্যবহার করতে দেবে না।
উল্লেখ্য, উত্তর ওয়াজিরিস্তান অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরেই অস্থির। এর আগেও মির আলি এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আত্মঘাতী হামলার চেষ্টা চালানো হয়েছিলো। গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স ২০২৫ অনুযায়ী, পাকিস্তান বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সন্ত্রাসপ্রবণ দেশ হিসেবে তালিকায় উঠে এসেছে। গত এক বছরে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সবার দেশ/কেএম




























