নেপথ্য ষড়যন্ত্রের অনুসন্ধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক গ্রেফতার
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই বিপ্লবের অগ্রনায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল শনাক্ত করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলটির মালিক সন্দেহে মো. আব্দুল হান্নান (৪৩) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, হামলার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর শনাক্ত করা হয়। মোটরসাইকেলটির নম্বর ঢাকা মেট্রো-ল-৫৪-৬৩৭৫। পরবর্তীতে বিআরটিএর তথ্য যাচাই করে মো. আব্দুল হান্নানকে এর মালিক হিসেবে শনাক্ত করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।
হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, এমন কাপুরুষোচিত হামলা শুধু রাজধানীতেই নয়, দেশের অন্যান্য স্থানেও ঘটতে পারে। এ কারণে ঘটনার আদ্যোপান্ত বের করতে শনিবার দিনভর মাঠে কাজ করে পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রের দাবি, আসন্ন ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই হাদির ওপর এ হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে। এতে দেশবিরোধী শক্তির মদত থাকার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। হামলার পর জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অংশীজন, সম্ভাব্য সংসদ প্রার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
হামলার পেছনে পতিত স্বৈরাচারের দল হিসেবে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জুলাই বিপ্লবের পর তিনি ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে তথ্য রয়েছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ফয়সাল করিম মাসুদ নামে এক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ক্যাডারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে রোববার রাত পর্যন্ত গুলিবর্ষণে সরাসরি অংশ নেয়া কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
খুনি দুজন যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সে জন্য দেশের সব বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দল, গোষ্ঠী ও নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই এ হামলা চালানো হয়েছে। এতে হামলাকারী চক্রটি সাময়িকভাবে কিছুটা সফল হলেও ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য ঢাকাসহ সারাদেশে রেকি ও তল্লাশি জোরদার করা হবে।
এ ছাড়া জামিনে থাকা কোন কোন সন্ত্রাসী কারাগারের বাইরে রয়েছে, তাদের একটি আলাদা তালিকা প্রস্তুতের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ডিবি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনও মামলা হয়নি। পল্টন থানার এসআই রকিবুল হাসান জানিয়েছেন, মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সবার দেশ/কেএম




























