মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সঙ্কেত
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে ‘সব সীমা’ তুলে নিলেন খামেনি!
ইরান তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর থেকে সব ধরনের সীমাবদ্ধতা তুলে নিয়েছে বলে দাবি উঠেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্যে নতুন উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ক্ষেপণাস্ত্র নীতিতে এতদিন যে সীমা বজায় রেখেছিলেন, সেটি এখন আর বহাল নেই—এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন ইরানের এক জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি কমিটির সদস্য আহমেদ বখশায়েশ আরদেস্তানি জানিয়েছেন—খামেনি দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর আর কোনো সীমা রাখছেন না।
আরদেস্তানি বলেন, আমরা আমাদের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চাহিদা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবো। কোনও বাইরের চাপের ভিত্তিতে নয়।
এর আগে খামেনির নির্দেশে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২২০০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিলো। কিন্তু আরদেস্তানির বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, তেহরান এখন সে সীমা আর মানবে না এবং প্রয়োজনে আরও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইরানের প্রতিরক্ষা নীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়—যা কেবল আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে গত জুনের সংঘাতের পর তেহরান যেভাবে সামরিক দিক থেকে আরও দৃঢ় অবস্থান নিচ্ছে, এ সিদ্ধান্ত সে ধারাকেই শক্তিশালী করছে।
এ ঘটনার মাত্র এক দিন আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি অভিযোগ করেছিলেন যে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়াশিংটনকে বিভ্রান্ত করছে। তার দাবি, ইসরায়েল ইরানের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রকে আবার ইরানের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়া যায়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, খামেনির এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইরান কার্যত ঘোষণা করলো—তারা কোনো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা বা চাপের তোয়াক্কা করবে না। বরং নিজেদের সামরিক প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতেই এখন তাদের মনোযোগ।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে এ পদক্ষেপ নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। ইরান যদি সত্যিই দীর্ঘ-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি শুরু করে, তবে তার প্রতিক্রিয়া পড়বে ইসরায়েল, সৌদি আরব, এমনকি ইউরোপীয় দেশগুলোতেও। বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দিতে পারে।
সবার দেশ/কেএম




























