বিএনপির ২০০ প্রার্থী চূড়ান্ত, চলতি মাসেই ঘোষণা
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলতি অক্টোবর মাসের মধ্যেই ২০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মনে করেন, যাকে প্রার্থী হিসেবে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেয়া হবে, তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না করলে মাঠ পর্যায়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার পরামর্শ দেয়া হয়। অন্যথায় নির্বাচনী মাঠে বিএনপি পিছিয়ে পড়তে পারে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
প্রার্থী যাচাই-বাছাই শেষের পথে
বৈঠক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রায় ১৫০ আসনে প্রার্থী নিয়ে তেমন জটিলতা নেই। এসব আসনে প্রার্থীরা মোটামুটি চূড়ান্ত। তবে একাধিক প্রার্থী ও গ্রুপিং থাকায় শতাধিক আসনকে জটিলতাপূর্ণ বিবেচনা করা হয়েছে। এ সংকট নিরসনে তারেক রহমানের নির্দেশে সাংগঠনিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঢাকায় ডেকে এনে দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে একযোগে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। পরে এসব আসনে ধীরে ধীরে একক প্রার্থীকে গ্রিন সিগন্যাল দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ প্রক্রিয়ায় কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখতে বলা হয়েছে, যাতে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীরা আগে থেকে জানতে না পারেন।
মাঠ পর্যায়ে বিভ্রান্তি
বৈঠকে বলা হয়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দলীয় পার্লামেন্টারি বোর্ডের মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। তবে গোপনভাবে প্রার্থীদের গ্রিন সিগন্যাল দেয়ায় এবং কেন্দ্রীয়ভাবে বিষয়টি খোলাসা না করায় স্থানীয় পর্যায়ে বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে।
জামায়াতই এখন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী
ওদিকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাঠে না থাকলেও জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে নেমেছে। বিএনপি এখনও প্রার্থিতা চূড়ান্ত না করায় মাঠ পর্যায়ে একাধিক প্রার্থী নিজ নিজ প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ অবস্থায় সাংগঠনিক সম্পাদকরা দ্রুত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার তাগিদ দিয়েছেন হাইকমান্ডকে।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়ে উদ্বেগ
বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের ‘ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল’ তৈরির উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা হয়। নেতারা জানান, প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত অনেক কর্মকর্তা অতীতে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং বর্তমানে জামায়াতপন্থি বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন হলে নির্বাচনে পক্ষপাতমূলক ভূমিকা নেয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ বিষয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তি দিয়ে তালিকা প্রণয়নের দাবি জানাতে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বিএনপি নেতারা।
অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নে উদ্বেগ
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। নেতারা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পক্ষপাতমূলক পদায়ন ও জামাতীকরণ ঘটানো হচ্ছে, যা সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করছে।
এ প্রেক্ষাপটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে উদ্বেগের বিষয়গুলো তুলে ধরেন এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
সবার দেশ/কেএম




























