জনসমুদ্রে শহীদ ওসমান হাদির বিদায়
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব পেলো হাদির জানাজার খবর
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম আলোচিত মুখ এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির শেষ বিদায়ে মানুষের যে উপচে পড়া ঢল নেমেছিলো, তা বিশ্ব গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীতে নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হয়ে প্রায় এক সপ্তাহ যমে-মানুষে লড়াই করার পর গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এ তরুণ বিপ্লবী। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার রাজপথে তার জানাজা ঘিরে যে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছিলো, তা গুরুত্বের সাথে প্রচার করেছে কাতারভিত্তিক আল জাজিরা, আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলো।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা হাদির জানাজার বিশাল জমায়েতের ছবিসহ বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে তারা তাকে ‘২০২৪ সালের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা’ হিসেবে অভিহিত করে জানায়, হাদির স্মরণে আজ বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে। হাদির জানাজা ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং জনসমাগমের গভীরতা তাদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্বয়ং এ জানাজায় অংশ নিয়েছেন। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এ জানাজার পাশাপাশি হাদিকে জাতীয় কবির কবরের পাশে দাফন করার বিষয়টিকে রয়টার্স ‘সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম বীরত্বের স্বীকৃতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ভারতের অন্যতম প্রধান সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং এনডিটিভি হাদির শেষকৃত্যের সরাসরি আপডেট প্রচার করেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের শিরোনামে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য উদ্ধৃত করে লিখেছে, ‘তুমি কখনো হারিয়ে যাবে না’। অন্যদিকে এনডিটিভি লাখো মানুষের শোকাতুর উপস্থিতিকে ‘হাদির রক্ত বৃথা যাবে না’—জনতার এমন অঙ্গীকারের প্রতিফলন হিসেবে বর্ণনা করেছে।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন এবং জিও নিউজ হাদির জানাজাকে ‘কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বিশাল জনসমাগম’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এবং পাকিস্তানের অন্যান্য সংবাদমাধ্যমও এ বিপ্লবীর প্রতি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ, তা তাদের প্রতিবেদনে ফুটিয়ে তুলেছে।
মোটের ওপর, একজন তরুণ সংগঠকের বিদায় বেলায় বাংলাদেশের রাজপথে যে আবেগ ও জনসমুদ্রের সৃষ্টি হয়েছে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো তাকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক অনন্য ও শক্তিশালী ঘটনা হিসেবে চিত্রিত করেছে।
সবার দেশ/কেএম




























