ভারতে আশ্রয় নেয়া আ’লীগ নেতারা চাপে পড়েছেন

সরকার পরিবর্তনের পর দীর্ঘ নয় মাস ভারতে অপেক্ষাকৃত নিরাপদে অবস্থান করলেও এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন দেশটিতে আশ্রয় নেয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। ভারতের সাম্প্রতিক ‘অবৈধ অভিবাসন বিরোধী’ পদক্ষেপের প্রেক্ষাপটে তাদের ওপর চাপ বাড়ছে বলে জানা গেছে।
ভারত সরকারের নির্দেশনায় অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের আটক করে সীমান্ত দিয়ে ‘পুশব্যাক’ও করা হচ্ছে।
যদিও এখনও পর্যন্ত ওই প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সরাসরি পড়েননি, তবে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগামী আগস্টের মধ্যে অভিযান আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করছে। ফলে শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভারতে আশ্রয় নেয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে একটি বড় অংশ পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতা এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কিছু সাবেক কর্মকর্তা।
পালিয়ে যাওয়া একাধিক নেতা জানিয়েছেন, দেশে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ এখনো অনুকূল নয় এবং নিরাপত্তার ঝুঁকিও কাটেনি। এ অবস্থায় ভারত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে চলে যাওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন অনেক নেতা। তাদের ভাষ্য, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ জন শীর্ষ নেতা ভারতে অবস্থান ত্যাগ করে বিদেশে গেছেন।
এদিকে, চলতি বছরের ১০ মে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের সবধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। ফলে দলটির নেতাকর্মীদের দেশে ফেরার পথ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ভারতের অভ্যন্তরীণ নীতিমালার আলোকে দেশটির প্রশাসন স্পষ্ট করে জানিয়েছে, তারা আর কোনোভাবেই ‘অবৈধ অভিবাসীদের’ ভারতে আশ্রয় দিতে রাজি নয়। কিছু পলাতক নেতা জানিয়েছেন, তাদের বিকল্প হিসেবে তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয় নেয়ার পরামর্শও দেয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রায় দেড় লাখ আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে অবস্থান করছেন। ভারত সরকারের নতুন কড়াকড়ির কারণে এ বিশাল সংখ্যক মানুষ এখন রাজনৈতিক আশ্রয়ের সংকট ও মানবিক অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
সবার দেশ/কেএম