অংশ নিয়েছিলেন সেনা-পুলিশ ও সাবেক মন্ত্রীরা
দিল্লিতে হাসিনার গোপন বৈঠক, নাশকতার পরিকল্পনা
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেত্রী ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনা রাজধানী নয়াদিল্লির অভিজাত লুটিয়েন্স বাংলো জোনে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশে সরকারবিরোধী অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির নীলনকশা করছেন—এমন তথ্য জানিয়েছে একাধিক নিরাপত্তা সূত্র।
সূত্রগুলো বলছে, দিল্লির ওই সুরক্ষিত সরকারি বাসভবনটি এখন কার্যত হাসিনার ‘ওয়ার রুম’-এ পরিণত হয়েছে। সেখান থেকেই নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটির শীর্ষ পর্যায়ের যোগাযোগ, পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনা পরিচালিত হচ্ছে।
গত ১১ অক্টোবর ওই বাসভবনে সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা, প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী-এমপি এবং দলের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা নিয়ে একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে। বৈঠকটি চলে প্রায় চার ঘণ্টা—সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আকবর হোসেন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চু, কক্সবাজারের সাবেক হুইপ সাইমুম সরোয়ার কমল, ফরিদপুরের সাজেদা চৌধুরীর ছেলে আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলু এবং টাঙ্গাইলের সাবেক এমপি ছোট মনির।
বৈঠকে মূলত তিনটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রথমত, ‘গুম প্রসিকিউশন চার্জে’ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অন্তর্ভুক্তির পর পরিস্থিতি মোকাবিলার পরিকল্পনা।
দ্বিতীয়ত, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করা।
আর তৃতীয়ত, দলকে নতুনভাবে সংগঠিত করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পুনরায় সক্রিয় করার কৌশল নির্ধারণ।
এ বৈঠকের পর হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মধ্যে মতবিরোধের সৃষ্টি হয় বলেও জানা গেছে। সূত্র জানায়, ড. ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত আন্দোলন নিয়ে মা-মেয়ের মধ্যে গত ৪ নভেম্বর দিল্লিতেই তর্কাতর্কি হয়। পুতুল মাকে আপাতত নীরব থেকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিলে হাসিনা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
দিল্লির ওই বাসায় হাসিনা ও তার মেয়ে ছাড়াও অবস্থান করছেন ভারতে দায়িত্ব পালন করা সাবেক এক হাইকমিশনার, ভারতীয় রাজনৈতিক মহলের ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবী এবং দিল্লি প্রেস ক্লাবের এক সাংবাদিক, যিনি নিয়মিত গণমাধ্যম যোগাযোগে সহায়তা করছেন। এছাড়া বাসভবনে চিকিৎসক ও নার্সের স্থায়ী উপস্থিতিও রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর ধারণা, দিল্লির এ গোপন আস্তানাটিই এখন নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়স্থলে পরিণত হয়েছে—যেখান থেকে বাংলাদেশে নাশকতা, হামলা ও উসকানিমূলক তৎপরতার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।
সবার দেশ/কেএম




























